Sunday, December 30, 2007

আন্তর প্রকৃতি




অভিমান
একটু একটু করে মেঘের মতন
জমছিল বুকের ভিতর কখন, পায়নি টের!
চোখে তারই ঘণ ছায়া।
পাতাগুল ভারি,
এলো-মেলো পরে তাড়াতাড়ি
চোখের উপর।
এখনও নামেনি বর্ষা
স্তব্ধ অন্তর,
ঝড়ের সঙ্কেতে যেন
চুপ করে আছে পাখি
ভুলে গেছে গান।
প্রাণ আনচান করে-
আঁখি যদি চায় তার পানে
বাতাসের বিপরীত টানে
দূরে চলে যায়।
হৃদয়ের চাপা গর্জন যেন
বলে হায় হায়
প্রকৃতির খেলা একি
অকরুন যেন
বর্ষা না নামে যদি
মেঘ জমে কেন ?

স্বপ্ন যখন ভাঙ্গে


স্বপ্ন চোখে ভাসে
মায়ের স্বপ্নে খোকা হাসে
তাকিয়ে দেখে ঘুমের থেকে
দেয়াল চারি পাশে।
কঠিন দেয়াল যত
কঠিন তারি মত
স্বপ্ন এমন ভাঙ্গা ।
স্বপ্নে খোকার নরম দুটো
চরন ছিল রাঙ্গা। ।
নরম ছিল মুঠি
হাঁটত গুটি গুটি,
টলো মলো পায়ে ।
বছর গেলে মায়ের খোকা
চলত রাগা পায়ে।
মায়ের কোল ঘেঁসে
দাঁড়াত সে এসে
ঘুমটি এলে পরে,
মায়ের বুকে পরম সুখে
থাকত ঘুমের ঘোরে।
ইঁটের দেয়াল, সিমেন্ট দিয়ে
বাঁধান ঘর বাড়ি।
তাইতে খোকা করেছে কি আড়ি
মায়ের সাথে আজ ?
খোকার ডাকে
স্বপনপুরে আসবে কখোন মাগো
সাঙ্গ করে দালান বাড়ির কাজ!

খোকা আছে দাঁড়িয়ে ঐ
স্বপনপুরের দ্বারে,
হাত বাড়িয়ে ডাকছে - ওমা মারে
নে মা আমায় কোলে।
মা কেঁদে কয়-
হায়্রে জীবন বেঁধেছ আজ
এ কোন জাঁতাকলে
খোকার স্বপ্ন কেঁদেই গেল চলে ।।

Friday, December 28, 2007

নিরুদ্দেশ যাত্রা


আজ সারাদিন বৃষ্টি বৃষ্টি- মেঘলা আকাশ ভারি,
দূর সাগরে ঝড়ের সাথে মেঘের বাড়াবাড়ি ।
লম্বা যত গাছেরা সব উঠছে ঝড়ে কেঁপে
পাখীর ছানা প্রবল ত্রাসে লুকায় মায়ের বুকে ।
সাগর জলে জেলের নৌকো নাচছে ঢেউয়ের মাথায় মাথায়,
সেই ছবিটা আঁকতে যে চাই আমার মনের সবুজ খাতায় ।
মস্ত উঁচু ঢেউ যেন পাহাড় আসছে তেড়ে
বালির বুকে লুটিয়ে পরতে আসছে ফিরে ফিরে ।
মনের সবুজ খাতা এখন সাগর দিয়ে ঘেরা
তার সাথে ঢেউ বৃষ্টি আর মেঘলা ঘরে ফেরা ।
মনের খোলা জানলা দিয়ে মেঘ ঢুকেছে ঘরে,
মেঘের ভেলায় স-ওয়ার হয়ে মন বেড়িয়ে পরে ।
কোথায় যাবি কোথায় যাবি মনকে ডাকি আমি,
মন যে এখন বাঁধনছাড়া ভীষণ দ্রুতগামী ।
পেড়িয়ে আকাশ পেড়িয়ে পাহাড় মন চলেছে ভেসে ।
কোথায় যাচ্ছে জানতে চাইছ- যাচ্ছে নিরুদ্দেশে ।।


আয়না


আয়না আয়না আমার কাছে আয়না
যত-ই ডাকি সোনা আমার
আমার পানে চায়না ,
এই আয়নায় যাদু আছে
চাও যদি এর পানে
তোমার অমন গোমড়া মুখ
ভরবে হাসির টান ।


তুমি বুঝি ছোট্ট ছেলে
বয়স হয়নি আজ ও ?
দেখতে পাচ্ছি মস্ত ঢ্যাঙা
পাচ্ছনা তাই লাজ ও !

লক্ষ্মী আমার সোনা আমার
আর করেনা রাগ ,
ঠোঁটের কোনায় দেখছি যেন
একটু হাসির দাগ ।

আয়না দেখে ইন্দ্রধনুষ
ছেলের মুখে হাসি
মায়ের চোখের তারায় তারায়
পুলক রাশি রাশি ।।

ঈর্ষা


ফুটকি কেমন লালা সিল্কের জামা দেছে গায়
অমনি একটা লাল জামা আমার ও মা চাই।
ফুটকি কানে দুল পরেছে, সোনার দুটো ফুল-
আমার কেন লম্বা-মতন, আমার ও চাই ফুল ।
দেখোতো ওর জুতো-মোজা, ম্যাচিং জামার সাথে,
আমার জুতো বিশ্রী কেমন- মোজা ও নেই সাথে।

এবার ভালো বেশ হয়েছে এক ই রকম জামা,
এক ই রকম জুতো-জামা, বেশ হয়ে না মা ?

শোনরে খুকি বলছি তোকে ইংসা কেন মনে?
যত-ই সাজো এক ই রকম, তফাৎ লোকে জানে
তুই তো মাথায় খাটো, তায় রংটা একটু চাপা
বড়ির মতন নাকটা যেন ভিম বাহাদুর থাপা
ফুলিয়ে গলা ঝগড়া করিস, লেখা-পড়ায় ফাকি
ফুটকি কেন প্রিয় সবার জানিস না তুই তাকি ?
শরীরটা তোর মনের আয়না- ফাঁকি দিস তুই কাকে !
মনের শোভা বারাস যদি বাসবে ভালো লোকে ।।

ঠাকুর যাবে বিষর্যন


কিছুই যে আর ভাল্লাগেনা, সদাই খারাপ মন
ফোস ফোস ফোস দীর্ঘশ্বাস ফেলছে সারাক্ষন
সর্বক্ষন চোখেতে জল দেয়না কিছুই মুখে
হ্যারে খুকি, কি হয়েছে, কে বকেছে তোকে ?
স্কুলের কোনো পরীক্ষাতে ফেল করেছিস -নাকি
দিদিমনি কান মুলেছে- দিস বলে তুই ফাকি?
দুষ্টুমিতে প্রথম যে তুই- এই তো ছিল জানা
গোমড়া কেন মুখটারে তোর, কোথায় হাসি খানা ?

আজ নবমী শেষ যে মাগো, কালকে ভাসান হবে
ঢাক-ঢোল সব চুপ করবে, আলো ও নিভে যাবে,
আরো বারো মাসের পরে দূর্গাপুজো হবে
আবার একটা বছর গেলে পুজোর ছুটি হবে.
কেমন করে কাটাব এই একটা বছর মা !
কি যে করি কিছুই যে আর ভালো লাগছেনা .
মন খারাপের বাজনা বুকে বাজছে সারাক্ষন-
কেমন করে আসি ঠাকুর যাবে বিষর্যন

Monday, December 24, 2007

সবুরে মেওয়া


আমাকে বলে ধৈর্য ধর,
মেওয়াটা ফলে সবুরে।
এখন কিছু অন্য কর।
প্রবধ দেওয়া এমন তর-
ভাল কি লাগে !
তবুরে- আর করি ই কি বা,
হবার যা তা হবেই যদি,
ভাবনাটাকে বলগা দিয়ে
ছোটাই- নদী, আকাশ-পাতাল
পাহাড় পেড়োই- দিনের বেলা
কাজের ফাঁকে পাখির ডাকে
রাতের বেলা ঘুমের ঘোরে
স্বপ্ন দেখি ঠিক দুপুরে-
তার হাতে হাত,
মিলিয়ে গেল স্বপ্ন যখন
তখন ভোরে- ঘুমিয়ে সবাই
আকাতরে-
আমি ছিলাম
আর ছিল সে
আমার পাশে।
নিশ্বাসে এক ভোর হল যেই
সবাই দেখি ডাকছে আমায়
বলছে, খোলো খোলো
তোমার নতুন জীবন পথের ধুলো
মুঠোয় করে তোলো ।।

Sunday, December 23, 2007

বিশ্বাস


তুমি আত নিষ্ঠুর নও
আমিও নই ততটা স্পশ কাতর,
তবুও নিষেধের প্রাচীড়
তবুও শিশিতে বন্দী গোলাপি আতর ।
মরূভুমি বা জগল
বিশ্বাস শুধুই ছিল সম্বল
আমার পাথেও,
যদি দিক ভুলি, ফেলি যদি আশ্রুজল
রেখা যদি আঁকে ভুল ছবি
বিশ্বাস আমার সবই
জানবে তা তুমি ।
তোমার নাই তো আজানা
আমার বুকের মাঝে তোমার ঠিকানা ।

জীবনের প্রতি


এখন-ও হয়নি শেষ আশা,
মত্যুর শীতল ছায়া এখন-ও রয়েছে দূরে,
জানি আমি, জানে সে ও,
যাবনা যাবনা ফিরে,
তবু উষ্ণ স্নায়ু, বলে মদু স্বরে-
এসো আরো একবার
মিলনের আয়ু এখনো হয়নি শেষ,
শ্পর্শ করেছ বীনা
ঝঙ্কার তার
রেশ রেখে গেছে কিনা, দেখো একবার ফিরে ।
জানি আমি, জানে সে ও
হয়ে গেছে শেষ- তবুও আবেশ
করে আছে বাসা।
পুঞ্জীভুত বেদনার মেঘ কখন হয়েছে ভাষা
নিয়ে যেও সাথে .
হয়েছে সময় ?
এখনি যে যেতে হয়-
তবু শান্তি তাতে,
বেদনার ভষা যদি নিয়ে যাও সাথে ।।

Thursday, December 20, 2007

অসুখ


আমার অষুধের জায়গাটা কোথায় গেল ?
ঘুম আসছেনা, বুকের বেথা বেড়েই চলেছে,
চোখ বন্ধ করলে শুনতে পাচ্ছি
ঢেউয়ের শব্দ- জব্দ জব্দ জব্দ ।

আমার পেনসিলটা কোথায় গেল ?
ব্যাথা মুখ বুজে বসে আছে-
গুমরে মরছে বুকের ভিতর।
বন্ধ দরজা জানালা কি
রুখতে পারে তোলপাড় ,পাহাড় প্রমান ঢেউ ?
তবু তাকে লুকিয়ে রাখার উপায়টা কোথায় গেল
আমার পেনসিলটা কোথায় গেল?
পারবে পারবে পারবে তোমরা এনে দিতে ঘুম-
নিঝুম রাতে!
কিম্বা স্বপ্নের মাঝে হাড়িয়ে যাওয়া
পথ খুজে দিতে ?

ডাক্তার তুমি কি দেখবে
আমার মাথার পোকাগুলো-
ঘিন ঘিনে কালো কালো।
আস্ত আস্তে সুরঙ্গ করে বুকের মধ্যে এসে জমা হয়-
তখন শুধু ভয় , ভয় আর শুধু ভয়!

চলে যাও, চলে যাও চলে যাও
তোমরা সব
আর নয় আমার পেনসিলটা দাও ।

Wednesday, December 19, 2007

একাকীত্ব


আবার নিঃশ্বঙ্গ একা,
তবু নয় আগেকার মত।
লেখা, আকা ছিল যত সঙ্গী-সাথী
তারাও গিয়েছে ছেড়ে
মন একা একা ফেরে
উদাসী দুপুরে ।

রাতের আশ্রয় শুধু বালিশ-বিছানা
বিক্ষিপ্ত মন চায় বলিষ্ঠ ঠিকানা ।
মার মত উষ্ণ কোনো
কোমল হৃদয়, বন্ধুর মতন প্রেম
যার কাছে সমর্পণ
শুধু দেহ নয়।
পাপ দেওয়া-নাদেওয়ার
মাঝে
মরে মাথা ঠুকে
না-বলা অনেক কথা
বথা হয়ে জমা হয় বুকে ।

একা


সেদিন সবুজ উপত্যকায় দাড়িয়ে ছিলাম একা,
চারি পাশে কাটাগাছের মেলা
তখন ছিল পড়ন্ত বেলা ।
তুমি ছিলেনা কাছে কোনোখানে-
যেমন থাক হয়ত ছিলে নিজের মনে
ব্যস্ত কাজে টেবিল-চেয়ার জুড়ে।
আমি ছিলাম আমার স্বপ্নপুরে ।
কাছে কোথাও আর ছিলনা প্রাণী
মন বলল্ আমি জানি জানি।
একা হবার আনন্দটা কিযে
একা হয়েই বুঝতে হবে নিজে।
সেদিন সবুজ উপত্যকায়
পিছন ফিরে দেখা
চলে এলাম এতটা পথ
কেমন একা একা ।।

******

আকাশ পরী হাত বাড়িয়ে ডাকছে তাকে
ভাবছ নাকি হাড়িয়ে যাবে!
সে সেয়ানা ।
পরীর ডানায় রামধনু রঙ
চুরি করে ভরায় কাগজ,
সে যাবেনা ।
সে যাবেনা ঐ আকাশে হাড়িয়ে কভু
তার আকাশ তো চার দেয়ালে
বন্ধ খাতা।
উদাস চোখে আকাশ দ্যাখে- মন যে তবু
পিছন ফেরা-যেথায় অভাব
আশন পাতা ।

জীবনের রাত-দিন


মেয়েটা দাঁড়িয়ে ছিল না বসে,
নাকি শুয়েও থাকতে পারে ;
তার জীবনের দিন গুলো সব
রাত হয়ে যায় কেন !
ভাবছিল সে এই কথাটা
কে বলতে পারে ।

দিন তো রাত হবেই শেষে
ভাবনার নেই স্থান-
বোঝাই তাকে
তবুও মেয়ের যায়না অভিমান ।

দিনগুলো সব রাত হয়ে যায়
ভোর রয়ে যাধ দূরে,
ঘুম ভাঙ্গানি পাখির ডাকে
সোনালি রদ্দুরে -স্নান করা
আর গান গাওয়া দিনগুলো
হাতছানি দেয়
জীবন তবু থাকে পিছন ফিরে,
মেয়ে আমার বুকেই থাকে
সান্ত্বনা দিই তাকে-
ভালোবাসা একটুখানি দাও দেখি রাতটাকে ।

Tuesday, December 18, 2007

বরণীয়







সেদিন রাতে ঝড় ওঠেনি
শান্ত গাছের পাতা,
মরণ আমায় শোনায়নি ভাই
ভালবাসার কথা,
তার দুখানি আঁখির পাতে
কী ছিল যে লেখা-
আঁধার রাতে তাও
হলনা দেখা ।।

স্পর্শে ছিল শীতল আভাস,
কঠিন বাহুপাশ ।
আমার সর্বনাশ,
লিখল আপন হাতে ।
স্মরনীয় সেই সেদিনের
নিঝুম নিশীথ রাতে ।

অচেনা তার ভাষা
ছিল অদেখা তার রূপ,
তারারা সব আকাশ ভরে
ছিল রে নিশ্চুপ ।
ভয় ছিল না প্রাণে,
সেদিন সুর ছিল না গানে ,
মরণ যেদিন ফেলল ছায়া
আমার অবুঝ মনে ।

হায়রে একি কঠিন বাঁধন
যায়না এরে খোলা
বুঝিনি তার ভাষা
তবু যায়না কেন ভোলা !
আর একটি বার এস মরণ
রাখ চরন দুটি
একটি কুশুম কলি যেথায়
করছে ফুটি ফুটি ।
আজ এ প্রাণে সুরের আগুন
রক্তে প্রদীপ জ্বালা ।
বাহুলতায় সুবাসিত
শিউলি ফুলের মালা।
এই আগুনে মরণ তুমি
চাও কি ধরা দিতে!
মৃত্যু তোমার মরণকে আজ
চাই ফিরিয়ে দিতে ।।

বসুন্ধরার গান




কত দিন পরে দ্যাখা হল আজ
বসলে এসে পাশে,
ফেলে রেখে তোমার যত কাজ ।

আসতে যেতে পথের মাঝে,
অনেক সময় অনেক কাজে,


হয়ত গেছি পাশ কাটিয়ে
ঠিক পড়েনা মনে ।
শুধু মনের গোপন কোনে
ব্যাথার মত উঠত বেজে বেজে,
হাড়িয়ে গেছে বন্ধু আমার
কোথায় পাব খুঁজে !


আজকে সকাল থেকে
কাজল কালো মেঘে
আকাশ গেছে ঢেকে
তুমি আজ এসেছ কাছে।


সব কাজ আজ থাকুক পরে
নীরবতা থাকুক ঘিরে।
আজ যে আমার ভরেছে মন প্রাণ।
বন্ধু তোমায় শোনাব আজ
বসুন্ধরার গান ।
আকাশ ভরা কালো মেঘের ভিড়
গুরু গুরু মেঘ ডাকে গম্ভীর,
বৃষ্টি ধারায় ভিজছে মাটি
রোদ-তাপে চৌচির ।
বন্ধু এবার বুক ভরে নাও ঘ্রাণ।
অনেক দিনের অদর্শনে অতৃপ্ত এ প্রাণ ।
বৃষ্টি ভেজা মাটির মত গাইছে সে আজ গান ।
বন্ধু এস শোনাই তোমায় বসুন্ধরার গান

তোমার জন্য




কতবার, কত জত্নে বাগানের কোনে
ছোটো ছোটো গাছ আমি করেছি রোপোণ।
কত আশা নিয়ে কুড়িটির ঘ্রাণ
আমি করেছি গ্রহণ ।
ঝড় নেই, জল নেই,
নেই বজ্রপাত ।
তবু কার হাত-
চুরি করে নেয় ঠিক
ফোটে যেই ফুল
আমার বকুল ।

অভিমানে তাই আর
যাইনা বাগানে ।
দিইনা তো জল-
আমার বাগান নেই-
সেটা হয়েছে জঙ্গল ।

তুমি আজ ডেকে গেলে ফুল চাই বলে।
মনে ভাবি, যাই তবে সব রাগ ভুলে ।

এসে দেখি একি কান্ড
এ কার বাগান!
এত রূপ, এত রঙ
কে দিল যোগান !

এতো চেষ্টা, এত আশা হয়েছে বিফল ।
আজ দেখি ফুলে ভরা আমার জঙ্গল ।

পুবের জানালা


ছোটো একটা জানালা পুবের
খোলা রাখি।
আলো আসে দেখি যেন
বন্যা - সে নিয়ে যায় সকল আঁধার
আমার ঘরের, ছোট্ট একটা জানালা শুধু
রাখি খোলা । মনে আশা হাওয়ায় ভাসা
তোমার দেশের তরঙ্গ সে
যদি আসে । আমার আকাশ বাতাস
যদি যায় ছুঁয়ে সে ।
পুবের একটা জানলা,

আমি বন্ধ হতে দিইনা তাকে,
ঝড়রের রাতে বৃষ্টি ভেজা হয়েও তবু
সেই জানলায় দাড়িয়ে দেখি
আসছ নাকি
মনেও আমার পড়ে নাযে
জান কিনা তুমি আমার সেই ঠিকানা
পুবের জানলা খানা ।।

Monday, December 17, 2007

রজনীগন্ধা


আমার ঘরের কাঁচের ফুলদানীতে রেখেছি তোমায় রজনীগন্ধা
তোমার মিষ্টি গন্ধ লাভা ছড়ায়না ধমণীতে ।
এখন ঘন অন্ধকারের বুক চিড়ে চিড়ে
চমকে উঠছে বিদ্যুত্
হাস্নুহানার গন্ধে মাতাল
সরীসৃপের মতন উন্মত্ত আমিও
প্রবল বর্ষণের পর
ক্লান্ত রিক্ত দেহ
পঙ্কিল ক্লেদাক্ত পথ অতিক্রম করে
ঘরে এসে দেখি
মনের ভুলে জানালা করিনি বন্ধ ।
চূর্ণ হয়েছে কাচ
তাজা রজনীগন্ধা ধুলায় লুটায় অসহায় ।
তোমার সবুজ দেহ বুকে নিয়ে নিলাম ঘ্রাণ ।
আঃ কি সুন্দর তুমি রজনীগন্ধা ।
তোমাকে দেখে মনে পড়ে সানাইয়ের সুর
আর কিছু অঙ্গিকার ।
তুমি হতে পারনা বন্য ।
তোমাকে সাজিয়ে রেখে
আমি যাই হাস্নুহানার কাছে ।
স্নিগ্ধ সুরভী নিয়ে তুমি থাক অপেক্ষায়
আমি খুজে ফিরে অরণ্য ।

Sunday, December 16, 2007

মোহো-ভুল-ভ্রান্তি


মনে হয়েছিল ভুল পথে চলেছি
যেন কোনো স্বপ্নাবিষ্ট, মোহোগ্রস্ত,
নেশাতুরের মতন
পতনের দিকে।
সুন্দরকে মনে হয়েছিল-অসুন্দর।
কুয়াশা যেমন
গতি রোধ করে- আবছা করে
দৃষ্টিকে। একটু খানি পাপ বোধ
গ্রাস করে সত্যকে,
মিথ্যা নয় ভালবাসি ওকে ।

---------------------------------------

আমি তোমার কাছে যেতে চাই
কোথায় আছ তুমি
আকাশে, বাতাসে, নদীতে, সাগরে !
নাকি আগুনে পুড়ে হয়েছ ছাই ।
আমি তোমার কাছে যেতে চাই-
আর্তনাদের মত শুনি
প্রতিধ্বনি ফিরে ফিরে আসে
ধাক্কা খেয়ে পাহাড়ে পাহাড়ে,
যে কথা আমি শুণ্যে ওড়াতে চাই ।
আমি তোমার কাছে যেতে চাই-
যে প্রেম দেয়নি ধরা,
রয়েছে গোপন
আমার অন্তরে, তোমার দেহঘরে,
আমি তাকে কাছে পেতে চাই,
আমি তোমার কাছে যেতে চাই ।

*************************

সে কৌতুক করেছিল,
আমি তখন ঠিক বুঝিনি,
তবু ভাল লেগেছিল।
কৌতুক তার নেশা,
নদীতে ফেলেছিল ছিপ
আর জাল ছড়িয়েছিল সরোবরে,
অমি খুব ভোরে উঠে
মাছ হয়ে ছিপটাকে নিয়েছিলাম গলায়
আর বোয়ালমাছের মতন জাল জড়িয়েনিছিলাম সারা গায় সেদিন সন্ধায় ।

সে কৌতুক করেছিল।
কৌতুক তার পেশা,
ছিপ রেখে, জাল ছেড়ে
সে যখন ফিরে গেল তার ঘরে
তখন গভীর রাত।
আমার মনে তখন মুক্তির আশা ।
কিন্তু আমি অনেক খুঁজেও পাইনি আমার হাত ।



নগ্ন প্রেম







এতদিন ছিল ভালো
বনে বনে গোপনে প্রেম
নদীর নিথর বুকে ছায়া ফেলে।
মাতাল হাওয়ার সাথে ওড়েনি আঁচল,
ছিল স্তব্ধ অচঞ্চল
লাজুক ফুলের মত ।

কোথা হতে এল ঝড়
বন নেই হোয়েছে শহর।
আঁচল খসেছে শুধু দৃষ্টিতে।
আয়নায় কি দেখেছে মানুষের চোখে
অরন্য ছিল ভালো
শহর করেছে নগ্ন ওকে ।

পিউ থেকে পূর্ব্বিতা


পিউ,
এখন যদি কেউ তোমাকে ডাকে
ঐ-দূরে, ঐ তাল-তমালের ফাঁকে ফাঁকে,
ঘুঘু ডাকা দুপুর বেলা
ছায়া ফেলা দিঘীর মতন
তোমার চোখে তাকিয়ে বলে-
আর নয়, আর নয় এখানে থাকা
এই শহর মেকী সভ্যতাতে ঢাকা,
আমরা যাই ফিরে সেই বন্য প্রেমের নগ্নতাকে ঘিরে
তোমার সহজ সরল হৃদয় মন্দিরে
সেইখানে সেই পূর্বদিশায় হাড়িয়ে যাওয়া
এই জীবনের মানে
তুমি মানবে কি তা !
পূর্ব্বিতা !

Friday, December 14, 2007

বুদ্ধবাবুর শান্তির বারি

দুঃখ পেয়েছে বুদ্ধবাবু- শান্তিকে আনো ধরে।
এখোনো তোমরা অধোমুখ কেন ?
নাম করো জোরে জোরে ।
জয় বুদ্ধ, জয় বিমান, জয় সিপিএম রাজ ।
লাল পতাকার হাওয়া দাও আর
পরাও মাথায় তাজ ।
তোমার বাড়িটা পুঋএ গেছে আর
তোমার ছেলেটা মৃত ।
তাতে কি হয়েছে, শান্তি আগুনে
ওরা যে গব্য ঘৃত ।
নাতির রক্তে ভেজা এই মাটি
মায়ের রক্তে ঘর-
মেয়েকে তোমার পাওনাই খুঁজে -
নিয়ে গেছে বর্বর -
বুদ্ধবাবুর দেডার বাইনী-
ধ্বংসলীলায় মেতে ।
এখন এনেছে শান্তির জল
কাটা ঘায়ে ছিটে দিতে ।।

Thursday, December 13, 2007

মিনিবাস




ইস্কুলেতে গিয়ে তুই কি করিসরে খোকা ?
চুপ করতো ভাল্লাগেনা কথা বোকা বোকা .
একিরে তুই কেমন ছেলে বোকা বলিস মাকে !
তা নয়তো কি, জান তুমি, সবাই আমায় খোকা বলে ডাকে !
অনেক বড় হয়ে গেছি একাই পারি যেতে
এবার থেকে আমায় তুমি আসবেনা আর নিতে I

চারটে বাজে খোকা আমার ফিরলনাতো ঘরে
ওগো শুনছ, যাওনা একটু , দ্যাখোনা খোঁজ করে l
দুটো মিনিবাসের সাথে খুব হল লড়াই
দুটোই যে চায় আগে যেতে , রেস চলে সাঁইসাঁই.
পাদানিতে ভ্যাবাচ্যাকা পড়ল খসে খোকা
বাস চলেছে ভীষণ বেগে , যায়নি তাকে রোকা.
ঘুরলো চাকা- রক্ত-ধুলোয় মাখামখা দেহ,
আহা কেমন কচি মুখটা, জান নাকি কে ও?
ও তো খোকা বনানীদির যাও নিয়েস ডেকে ,
মা পড়ল বেহুঁস হয়ে খোকার রক্ত দেখে ।

ছন্দপতন


পদ্য লেখা শেখাব আজ, বানিয়ে লেখ ছড়া,
ছেলেরা সব দেখাও খাতা ছন্দে ছন্দে ভরা ।
দেখি টোটন কি লিখেছ- আরে, এ আবার কি !
” অঙ্কস্যার ক্লাসে বসে কেবল মারেন ফাঁকি ”
মারব কোষে গাঁট্টা মাথায় , এই লিখেছ বসে !
তা নয়তো কি, ঠিক কিনা ভুল বলুন দখে এসে ।
এ্যালজ্যাবরা, জিওমেট্রি, ট্রিগনোমেট্রির গুঁতো ,
সেখান নাতো কিছুই ক্লাসে কেবল করেন ছুতো ।
ছুটির পরে স্যারের ঘরে ছেলেরা সব গিয়ে
শিখে আসে অঙ্ক কষা নগদ টাকা দিয়ে ।
পদ্য লেখা যায়না শেখা না থাকলে ঐ নেশা -
অঙ্ক ফাজিক্স, কেমিষ্ট্রিটা শিখতে স্কুলে আসা ।
অঙ্কস্যারকে বলুন ক্লাসে পড়াতে মন দিয়ে,
হেডস্যারকে দ্যাখান আমার এই কবিতা নিয়ে ।
পদ্য লিখে কি হবে স্যার শব্দেতে মিল করা !
অঙ্ক খাতায় ছন্দপতন কেবল ভুলে ভরা ।
আমাদের স্যার একটা দাবী অন্য কিছু নয়,
এবার থেকে স্কুলের পড়া ক্লাসেই যেন হয় ।

ব্যাকরণ

পন্ডিত ডেকে বলে কি লিখেছ কবিতা
সেখালাম এত কিছু ভুলে গে লে সবই তা !
এখানে কমা , সেখানে দাঁডি এবারে সেমিকোলন দাও ।
তোমাকে ক্ষমা কি করে করি , আমাকে জিনি ভোলেন যাও,
তার নাকেতে তাড়াতাড়ি মস্ত বড় দড়ি দাও ।
অর্থহীন শব্দ কথা, শব্দহীন অর্থ যত ,
এক হাঁড়িতে ঢাকনা দিয়ে পাকাও কেন ইচ্ছা মত ?
মন বলে আমি অত ব্যাকরন মানিনা,
শব্দের মাঝখানে দাঁড়ি কমা টানিনা।
পন্ডিত হতে আমি চাইনিতো কোনোদিন,
আমার এই মাথা জুরে শব্দের বিন্ বিন্।
সেই সব শব্দকে টেনে এনে বাইরে ,
ছন্দের খাপে পুরে ভারি মজা পাইরে।
ছন্দের ঘারে চেপে অর্থও আসবে ।
বের হবে বাহিরেতে যত ঝেড়ে কাশবে ।
শব্দই হাসে কাঁদে , শব্দই গান গায়,
শব্দের তালে তালে এমনটা ভরে যায় ।
আনন্দে থাকা চাই একটাই এ জীবন-
পন্ডিত দূরে থাক সাথে নিয়ে ব্যাকরণ।।

হরতাল

এই শম্ভু চললি কোথায় আজ তো সবই বন্ধ
তোকে দেখে মনে আমার লাগছে কেমন ধন্ধ
বলেছিনা কালকে রাতে আজ হরতাল ভাইরে
তবু কেন ছাতা হাতে যাস তুই বাইরে ?
শীত পরেছে লেপ কাঁথাটা চাপিয়ে দিয়ে গায়েতে
আয়না খাটে শুয়ে কাটাই আমরা দুটি ভায়েতে ।
দোকান বাজার বন্ধ যে আজ বাসের চাকা ঘুরবেনা ,
আজ সকালে কেউতো রে ভাই আপিস যয়ন করবেনা ।
নারে দাদা আজকে আমি থাকব নাকো ঘরে ,
এমন করে বন্দী আমায় যেন না কউ করে ।
রাজনীতি কি বুঝি নাতো - বঝি না হরতাল ,
জানি কেবল বসলে ঘরে জোটেনা ভাত-ডাল ।
মহাত্মাজীর অস্ত্র ছিল হরতাল কোনকালে ,
তাঁর দাপটে ইংরাজ দেশ ছেড়েই গেছে চলে ।
এখন যে দেশ গরতে হবে করতে হবে শ্রম,
বসলে ঘরে ঘুচবে দুঃখ্য এ তোমাদের ভ্রম ।
শ্রমের কোনো বিকল্প নেই শোনো আমার কাছে ,
অলস হয়ে থাকলে বসে অনেক দুঃখ্য আছে ।
শুবনা তাই কারুর কথা যারই কাজে আজ,
চলনা দাদা ভেঙ্গে ফেলি এই হরতাল রাজ।।

বুড়োর হুড়ো

আমাদের অফিসেতে কাজ করে এক বুড়ো,
কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা দিতে জানেন হুড়ো।
পিয়নটাকে কেবল ছোটান ‘কিনে আনরে পান’।
যখনই কেউ ছাড়বে ধুঁয়ো দেবেন একটা টান।
ফাইল যদি টেবিলে যায় দেবেন একটা তাড়া -
‘পিছনেতে লাগছেনাকি কেউ কিম্বা কারা?
অফিসএতে আসছি বলে কাজ করতেও হবে,
এমন কথা এই বয়সে কে শুনেছে কবে।
চিথি যদি লিখতে হবে লেখনা রে ভাই তোরা,
কাজ দেখলেই ফাইল কেন আমার দিকে ছোঁড়া!
হিসাব কিতাব রাখতে বুড়োর ভীষণ করে ভয়,
চোখেও নাকি পড়ছে ছানি, হিসাব রাখা দায়।
সাহেব বলেন ‘বসুন তবে টেলিফোনটা নিয়ে’।
মনে ভাবেন কথাবার্তা শুনোবো লুকিয়ে।
ফোনোটা তুলেই চ্যাঁচায় বুড়ো -’কি চাই এতো ভোরে?
সকাল হতেই অফিসে ফোন, বসতে এরা দেবেনা চুপ করে !

আমি বলি -ও হুড়োদা সাহেবের ফোন ওটা।
তাইনাকিরে, এতক্ষনে বল্লি কেন ব্যাটা।
মজা বুঝি দেখছিলি তুই দেব এমন হুড়ো ‘
অফিস মাথায় করে চ্যাঁচায় আমাদের সেই বুড়ো ।

নেমন্তন্ন




পরশু আমার বাড়ি এস মেয়ের আমার বিয়ে,
আসবে কিন্তু খালি হাতে উপহার না নিয়ে।
আশীর্ব্বাদ আর ভালোবাসা এটাই প্রার্থনীয় ,
নেহাত যদি ইচ্ছা করে কিছু একটা দিও।
সোনার দাম তো অনেক চড়া, গয়না নাইবা দিলে,
আজকাল তো অল্পদামেই অনেক কিছু মেলে।
মেয়ের পিসী শুনলোনাতো হার কিনেছে মোটা,
বিজনবাবু শুনছি নাকি দেবেন একটা গোটা।
গোটা মানে গোটের মালা দাম কত কে যানে,
মিতালি তো সোনার ফুল দিচ্ছে দুটো কানের।
পাশের বাড়ীর কুন্ডুবাবু দেবেন বেনারসী,
ওনার তো ভাই অনেক টাকা, খরচ করেন বেশী।
তোমাদের সে সামর্থ নেই কী হয়েছে তাতে!
এস কিন্তু পরশু রাতে, না হয় খালি হাতে।

দেবীমা



বড় বাড়ির বারান্দাতে প্রদীপ জ্বলে কত দূরের থেকে দ্যাখাচ্ছে ঠিক তারার মালার মত।
বড়বাড়ির বৌ য্যানমা লক্ষ্মী প্রতীমা, ছেলে কোলে দাঁড়িয়ে আছে, আয়মা দেখে যা।
ঝলমলে ওর পোষাক-আসাক, মুখ ভরা ওর হাসি, তোর কেনমা ছেঁড়া কাপড় কত দিনের বাসী।
চলনা মা যাই ভোজ হচ্ছে, পেট ভ’রে খাই গিয়ে। নারে খোকা ভয় হয় রে, দেয় যদি তাড়িয়ে!

মাগো দূরে ঐ বুড়িমা ছেঁড়া কাপড় পরে, দাঁড়িয়ে কেন ছেলের সাথে মুখটা কাল করে।
পূজোর দিনে বাজছে সানাই, জ্বলছে কত আলো, মাগো ওদের দূঃখ দেখে লাগছেনাকো ভালো।
চলোনা যাই ডেকে আনি, পাত পেতে দিই খেতে-
এই দারয়ান, এক্ষনি যাও, বল ওদের যেতে ।
নোংরা নাকে সর্দী ছিছি ওদের বাসিস ভালো-
তুই তো আমার সোনার ছেলে ঘর করেছিস আলো।
ছেলের বুকের মন্দিরে যে ছিলেন দেবীমা,
ব্যাথায় কাঁদেন এই বুকে আর থাকা তো যায় না।।

সূর্যোদয়


নন্দীগ্রাম একটা নাম রক্ত দিয়ে লেখা -
কৃষক এখানে ঝড়ায় রক্ত বন্দুকে টানে রেখা ।
রেখার দুধারে ভারাটে গুণ্ডা মরে মারে আসে তেড়ে ,
মেয়ে, শিশু, বুড়ো ভয়ে কেঁপে মরে লাল পতাকার ঘেরে ।
থানার দারোগা, সৈন্য সমেত দ্যাখে জুল জুল চোখে -
কেমনে চলেছে হত্যালীলাটা , কেমনে মরছে লোকে ।
কৃষকের হাতে বন্দুক আজ জমি টাটাদের হাতে,
কৃষির উপর শিল্প সত্য কোনো ভুল নেই তাতে।
কৃষ্ক দরদী লাল নেতা হাঁকে দে দমাদম মার
রক্তগঙ্গা বয়ে যায় তবু মানছেনা কেন হার !
রাধার সখীটি বড় লাল টিপে রাখে কপালটি ঢেকে
মুখে ভাষাখানি অতি অসভ্য কেডার কে বলে ডেকে-
কাস্তে-হাতুড়ি থাক পরে আজ, বন্দুক নাও তুলে-
মা-বোন কারেও কোরোনা রেয়াত, ভভ্যতা যাও ভুলে।
সুভাষের মুখে কেবলি কূভাষ, বিমান বলেনা সত্য
শ্যামল এখন রক্তবর্ণ , অহঁঙ্কারেতে মত্ত ।
বুদ্ধবাবু সিনেমা দেখেন, এটাই তো তার কাজ,
বহিরাগতরা মরছে মরুক - বাহবা গুন্ডারাজ ।
নতুন সূর্য্য উদয় হয়েছে রক্ত নদীর ধারে,
সুশীল সমাজ এবারে চাইলে, সে ছবি দেখতে পারে ।

ধিক্কার


ধিক্ ধিক্ ধিক্কার ধিক্ এই সরকার
এখানে বাতাসে বারুদগন্ধ ঘাসে পরে ভাঙ্গা চুরি।
হলদি বক্ষে শিশুদেহ ভাসে মার বুকে পোঁতা ছুরি।
গুলি চলে গেছে বুক পিঠ চিরে রক্তে যে ভাসে যোনি ।
একি ভয়ানক শক্তি প্রকাশ কার এই শয়তানী ?ভীষণ দর্পে হেসে বলে বাবু - এরা তো বহিবাগত ,
জব্দ করেছি নষ্টামি যত, কে হে তুমি ঝার বাণী ?
রাজ্য আমার এরা সব প্রজা নীচু জাত চাষা-ভূষো
জমি ছাড়বেনা স্পর্ধা কতটা এস ভরে দেই ঠুসো।
দয়া করে আমি যতটুকু দেব খুশী থাক তাই নিয়ে ,
তা নয় ব্যাটারা লড়তে এসেছে মা-ছেলে-বউ নিয়ে ।
পুলিশ, কেডার, অস্ত্র-শস্ত্র সবই তো আমার কাছে ।
মাছির মতন টিপে মেরে দেখি এদেরও রক্ত আছে।
সেই রক্তের জন্য তোমার এতটা চোখের জল ?

বাবু তুমি বুঝা পিশাচ-শিদ্ধ যেতে চাও রসাতল !
নরককুন্ড ঢেকে রাখ যেই লাল শালুখানা দিয়ে ,
যেদিন পুড়বে পতাকা তোমার তোমাকেও সাথে নিয়ে-
চোখের জলের দ্যাখা কোনো আর পাবেনা সেদিন তুমি ।
বুদ্ধি থাকেতো সময় থাকতে ছাড় এই শয়তানী

রমজান




রশিদমিঞা রিক্সা চালায় সকাল দুপুর রাত
তাইতে তাদের জোটে কাপড় তাইতে জোটে ভাত ।
রশিদমিঞার ছোট্ট ছেলে রমজান তার নাম
বায়না ধরে পরবে সে যে করবে না এই কাম ।
রশিদ গিয়ে বল্লে বাবু পড়বে আমার ছেলে ,
ভর্ত্তি করে নেবে বল কত রূপয় দিলে ?
হেডমাষ্টা বলে কিছুই দিতে হবে নাকো
ডোনেশনের বাক্সে কেবল হাজারখানেক রাখো ।
বই খাতা ব্যাগ নিয়ে যখন রমজান যায় স্কুলে,
গরীব বাপের সিনা তখন গর্বে ওঠে ফুলে ।
বর্ষাকালের এক দুপুরে হঠাত্ ভাঙ্গন ধরে
স্কুলঘরটার একটা দেয়াল পড়ল ভেঙ্গে ঝরে ।
পাঁচটি শিশু পড়ল চাপা গেল তাদের প্রাণ,
তাদের মাঝে একটি শিশু রশিদের রমজান ।
স্তব্ধ রশিদ বসে আছে পাথরচাপা বুকে ,
হেডমাষ্টার হেঁকে বলেন নসীব বলে একে ।
কানাকড়ি ছিলনারে যার জীবনের দাম ,
দশটি হাজার ক্ষতিপূরণ করবে রাজ্য দান ।
রূপয় আমি চাইনা বাবু দাও ফিরিয়ে জান-
ডুকরে কাঁদে রশিদমিঞা -আয় ফিরে রমজান।।

অদ্ভুতুরে




মামদো বলে শাঁকচ্চূন্নী এ তোর কেমন ঢঙ,
শণের নুড়ি চুলেতে তোর ঘোর কমলা রঙ।
বেগুন ঠোঁটে ফাহুন হাসি গন্ধ মাখিস পচা বাসী
খ্যাঁকরাকাঠি চেহারা তে সাদা খড়ির টান।
তোকে দেখে শাঁকচ্চূন্নী নাচে আমার প্রাণ।
আয়না আমার তেঁতুল গাছে,
ভোজ হবে আজ পচা মাছে
মন করে আনচান,
ধরনা রে ও শাঁকচ্চূন্নী ক্যানক্যানে তোর গান ।

আমি থাকি শ্যাওড়া গাছে, শাঁকচ্চূন্নী নাম
মামদোবাজী করিস কেন এইবারে তুই থাম।
বেম্ভদোত্তি জাতের ভুত সে, বাঁশ বাগানে বাসা
পচাপচা ইঁদুর ছানায় বাসাটি তার ঠাসা।
কিম্ভুত তার ভুতুরে রূপ, অদ্ভুত তার স্বর
শুনতে পেলে তোর এ কথা মটকাবে তোর ঘাড়।
তুই মামদো অজাত কুজাত,
আমার তরে পাতিস না ফাঁদ
পেত্নীকে ডাক কাছে,
বেম্ভদত্তি করবে বিয়ে যাবে আমায় সঙ্গে নিয়ে
বাঁশ বাগানের গাছে।

গাছ কাটা





ও মামাগো শুনতে পাচ্ছো, গাছ কাটছে ভুলো!
গাছ কাটছে কাটুকনা সে, কানেতে দাও তুলো ।
কী যে বলো, গাছ কাটাট বেআইনী তা জানো ?
তুইতো জানিস বলনা গিয়ে গোল করছিস কেন ।
য়্যায় ভুলো, আয় নেমে আয় তো , গাছ কাটছিস কেন ?
বেশ করেছি আমার ইচ্ছা বাবার গাছ যেন ।
তবেরে ব্যাটা বাপ তুলেছিস ডাকবনাকি পুলিশ ?
গাছ নয়তো ডাল কেটেছি, দেখতে পাওনা , ফুলিশ !
তাইবা তুই কাটবি কেন, গাছটা আমআর জানিস !
তোর গাছ তো ডালপালাটা নিজের দিকে টানিস ।
ডাল বেয়ে চোর আসবে ছাতে পড়বে মাথায় বাজ।
চোরের সাথে আঁতাত্ করা বার করছি আজ ।
ওরে বাবা ডাল ভেঙ্গেছে পট্ পট্ পটাং,
পড়ল ভুলো ধূলোর উপর আছার খেল শটাং ।

স্বপ্ন




এমন কেন হয়, যখনই ভাল স্বপ্ন দেখি ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।
কালকে দেখি নতুন জুতো নতুন জামা পরে
যাচ্ছি যেন ইস্কুলেতে ইস্কুলবাস চড়ে ।
নতুন নতুন বই খাতা সব করছিল চক্ চক্
এমন সময় হঠাৎ কোথায় শব্দ হল ঠক্ ।
চমকে উঠে জাপটে ধরি আমআর টিনের বাটি ,
সারাদিনের ভিক্ষার ধন, আমার জিয়নকাঠি ।
ঘুমিয়ে ছিলাম স্বপ্নকাজল মাখিয়ে নিয়ে চোখে -
রশিদচাচা হাত বাড়াল বাগিয়ে নিতে তাকে ।
ফুটপাথেতে জাগি মোরা ফুটপাথে ঘুমাই,
তবুও ঘুমের ঘোরে আমার স্বপ্ন দেখা চাই ।

বুড়িমা


মাগো নীচে ঐ বুড়িমা ছেঁড়া কাপড় গায়,
শুকনো মুখে একলা কেন বসেই আছে ঠায় ?
ঠিক যেন মা ঠাম্মা আমার নিয়েসনা ডেকে,
আমার ঘরে আমার কাছে থাকবে এখন থেকে ।
ঠাম্মা আমায় বাসতো ভালো গল্প বলত কতো ,
আজকে থেকে বুড়িমা ও থাকবে যে তার মতো।
আমরা দুজন খেলব লুডো দুই বন্ধু যেন ,
তোমাকেও তো ভালবাসি , রাগ কর যে কেন !
বুড়িমাকে বলে দেব শুনবে তোমার কথা ,

শুতে দেব বুড়িমাকে আমার জোরা কাঁথা ।

অনাথ শিশু দত্তক তো নিচ্ছে কতো লোকে,

আমরা নেব দত্তক মা আমার বুড়িমাকে ।

টেকো


চুল ছেঁটেছ কেন ?
এমনিতেই তো টাকের মাথা
ফুটবে কাঁটা জান ?
ওমা একি তাও জান না-
কেউ বলেনি বুঝি ?
না বলার কারনটা কি অভয় দাও তো খুঁজি।
এমনিতেই তো তোমার অমন হাঁড়ির মতন মুখ।
তার উপরে চোখদুটোতো হোঁদল কুত কুত!
য়্যাই খুকিরা হাসিস কেন বুঝিস না ওর ব্যাথা !
ছুটীর পরে বলব অখন সেই ন্যাড়াটার কথা।
কোন ন্যাড়াটা ! এবার কি-
দিলাম সেদিন এঁকে !
তখন তো খুব হেসেছিলি
তার ছবিটা দেখে !

হাড়িয়ে গেছে মা


হারিয়ে গেছে মা।
এদিকে যাই ওদিকে যাই
এঘরে যাই, ওঘরে যাই।
কোথাও যে পাইনা।
হারিয়ে গেল কোথায় আমার মা ।
ভোরের রাতে ঘুমের ঘোরে
শুনতে পেলাম আদর করে
মা যেন ঐ ডাকে।
ওরে আমার সোনা মেয়ে
সকাল হল দ্যাখরে চেয়ে
ভোরের আলো কাটছে আঁধারটাকে।
তাকিয়ে দেখি সূন্য ঘরে-
দাইমা শুয়ে মেঝের পরে-
আর তোরে কেউ নেইকো কোনোখানে।
এদিকে চাই ওদিকে চাই
এঘরে যাই, ওঘরে যাই
মার গলা যে শুনতে পেলাম কানে ।
বারান্দাতে গিয়ে দেখি
বাবা আছে দাঁড়িয়ে একি
মায়ের ছবি জড়িয়ে নিয়ে বুকে।
উদাস চোখে আছে চেয়ে-
ঝরছে যে জল দুচোখ বেয়ে
কেমন করে বোঝাই এখন এঁকে।
কাছে গিয়ে বলি ডেকে -
মায়ের ছবি পাশে রেখে
লক্ষ্মী বাবা এবার শুয়ে পড়ো।
আর করোনা চিন্তা কোনো
একটা কথা বলি শোনো-
আজকে থেকে আমি হলাম বড়।

আমার ভাষা

আমার ভাষা আমার জন্য, তোমার জন্য নয়ত।
আমার মত ছোট্ট ছেলে আছে কোথাও হয়ত।
আমি যখন বলব ‘চ যাই নীল পাহাড়ের দেশে’ ।
আমার সঙ্গে চলবে সে ঠিক কল্পরথে ভেসে।
আমি বলি ‘ভুতের দেশে মামদো ভুতের বাড়ি যাই’।
ছোট্ট বন্ধু বলবে ‘এমা, এটাই তো ঠিক আমি চাই’।
তুমি বলবে ‘ভেল্কি নাকি এসব তোমার চালাকি’।
কী করেই বা বুঝবে তুমি, ছোট্ট হবার জ্বালা কি!
ভাব মুলুকে ভাবের দেশের ভাবের ভাষা বোঝে যেই
আমার ভাষা তারই জন্য আর তো কারো এনট্রি নেই।

স্বপন বুড়ো

যেইনা আমি পড়তে বসি বই খাতা সব নিয়ে
স্বপনবুড় হাতছানি দেয় বকের পালক দিয়ে।
হাতছানি দেয়, ফোকলা হাসে, হাতপা তুলে নাচে,
শব্দ শুধু করেনা সে মা শুনে নেয় পাছে।
মাকে ডেকে যতই বলি ঠিক দুপ্পুর বেলায়
হয়না আমার লেখাপড়া স্বপনবুড়োর ঠেলায়।
মস্ত বড়ো চোখ পাকিয়ে শাসন করে মা,
বাবা হাঁকেন মারব এবার যা পড়তে যা।
পরীক্ষা তোর আপ্রিলে না! কেবল ফাঁকির ফন্দী।
ঐ ঘরেতে সারা দুপুর রাখব তোকে বন্দী।
জানেনা তো এরা সবাই, স্বপন বুড়োর সাথে
ঘুরব আমি দেশ বিদেশে, ফিরবনা আর রাতে।
কেবল ভাবে মিথ্যা বলি, সন্দেহে মন ভরা।
এবার গেলে ফিরবনা আর, বুঝবে মজা এরা।

বাঁদরামি



খোকাবাবু খাচ্ছিল বেদানা ছাড়িয়ে,
দ্যাখে এক হনুমান বাগানে দাঁড়িয়ে
হনুমান কলা খায় এটা তার জানা,
ভাবে মনে এতো তবে খাবেনা বেদানা।
মাকে ডেকে বলে দুটো কলা দাওনা মা,
মা বলেন ভালো কথা খেয়েছ বেদানা ?
বেদানা তো খাব আমি, কলাটা বাঁদরে,
মা বলেন তাই বটে আদরে আদরে
বাঁদর হয়েছ খুব এটা হলো জানা,
আগে শেষ করো দেখি তোমার বেদানা।
এ তো ভারি জ্বালা দেখি হনুমান ভাবে,
ভালো মনে না দিলে তো কেড়ে নিতে হবে।
এক লাফে হনুমান বেদানাটা কেড়ে-
ঠাস করে মারে চড় ঝুঁটি দিল নেড়ে।
মা এসেই বলে- কৈ বেদানার খোসা ?
সে তো এক হনুমান নিয়ে গেছে বাসা ।
বড় বার বেরেছতো, কথা বল মিছে,
ঠাস করে মারে চড় খুব রেগে গেছে।
ভ্যাবাচ্যাকা খোকা ভাবে কী করেছি দোষ
হনুমানে মারে চড়, মা ও করে রোষ !

বিড়ালছানা





গুরুমশাই রাগ করেছ কেন ? হয়নি পড়া বলে !
কাল যে আমার বিড়ালছানা কোথায় গেছে চলে।
তারই জন্য কান্নাকাটি, মাখামাখি কাদামাটি, খুঁজছি সারা পাড়া।
তুমি কেবল জান শুধু পড়া পড়া পড়া।
বিড়ালছানার জন্য আমার দিনটা মাটি হল।
তারই জন্য হয়নি করা তোমার অঙ্কগুলো।
দাওনা তোমার চশমাখানা দেখি চোখে দিয়ে,
ভয় পেয়ে ঠিক আসবে দেখো লেজটি গুটিয়ে।
তখন তুমি যত খুশি শিখিও আমায় পড়া-
বিড়ালছানা যতই ডাকুক দেবনাতো সাড়া।
নেবনাতো কোল ওক, দেবনা দুধ-ভাত
তোমার পাশে বসে পড়া করব দিন-রাত।
কিন্তু যদি দেখি দুঃখ খুব হয়ছে ওর মনে-
আর চোখেতে তাকিয়ে যদি দেখি ঘরের কোণে
গোঁফ ঝুলিয়ে আছে পুষি বসে।
আদর তখন করব খুব কষে।
তুমি যেন কোরোনাকো রাগ
ততক্ষনে হয় যাবে পড়া প্রথমভাগ

ভাবুক


ভেবে ভেবে ভাবুক হল ভবতোষের ভাই
ভাবের ঘরে গিয়ে বলে ভাবনা কিছু চাই।
ভাবের ঘরের দ্বারি বলে চলবেনা ও চালাকি
ভাব মুলুকে আসতে চাও যে খুলতে পারবে তালা কি?
ভাবুক তুমি প্রমান কোথায় , কি ভেবেছ এদ্দিনে।
খাতার পাতায় লিখে লিখেও শেষ হবেনা সাতদ্দিনে
এমন যদি লিখতে পারো, তবেই পাবে ভাব দেনা
নিলে তো ভাই নকল ভাবুক, ভাবের দ্বারি ভুলছেনা
এই বলে সেই আজব দ্বারি হাসলো এত হা করে
যত ছিল ভয়ের ভাবনা ঢুকল মুখে ধাঁ করে।
খানিক কেঁপে খানিক ঝেঁপে বল্লে দ্বারি সেলাম ঠুকে
হুজুর বড় ভুল হল লাগবেনাকো প্রমান আর।
ভাই বল্লে ভবতোষের -এবার দ্বারি খোলরে দ্বার।
যেইনা বলা হঠাত্ চোখে দেখল যেন আঁধার ভাই
কানটি ধরে দাড়িয়ে দাদা পড়ার ঘরে ঘুম কে যায়!
সেই জন্যেই বলছি তোমায়,
ভাবুক হওয়া তাকেই মানায়
ভাবনাটি যার মাথায় রয়।
ভাবের ঘরে করলে চুরি,
এমন হাল যে সবার হয়।

মূর্খমন্ত্রী


সাবধান সাবধান
মূর্খমন্ত্রী ইদিকে আসছেন।
ফন্দীগ্রামে শুনছি নাকি শান্তি ফিরেছে এগারো মাস পরে ।
নতুন একটা সূর্য ও নাকি উদয় হয়েছে
সঙ্গে লাল পতাকা উড়ছে ঘরে ঘরে।

[আমাদের স্বগোতক্তি ]
ফন্দীগ্রাম স্মশান হয়েছে, প্রাণের সঙ্গে মান,
সবই তো হয়েছে বলি।
পোড়া ঘর আছে, মানুষ তো নেই
অশান্তিটা কেই বা করতে পারে !

[মূর্খমন্ত্রী]
ঘরের মানুষ ঘরেতে ফিরেছে, তবু বল ঘর খালি।
তোমাদের বুঝি আর কাজ নেই
শুধু আমাদের দাও গালি।
তোমাদের মুখ বন্ধ করার ক্ষমতা আমার হাতে।
আমরা এখন ধর্ষণ আর হত্যালীলায় ভীষণ ব্যাস্ত বলে
যতই চ্যাঁচাও কান দিচ্ছিনা তাতে।
ফন্দীগ্রামের লাল সুর্য্য এখনো নতুন তাই,
পাচ্ছনা টের, কদিন পরেই আঁচ পাবে গায়
সাবধানে থাক ভাই।
ভুলেও আমাকে ভেবনা তোমরা মূর্খমন্ত্রী
আমি ছিপিএম জেনো।
হালুয়াটাইট করে দেবে মোর কেডার বাহিনী
চিহ্ন রবেনা কোনো।

ওরে !
আমার রাজ্যকবি কোথায়, সে কি কয় !
[বোকাবাক্সে মুখ দেখাতে গেছে বোধ হয় ]
চুপ ব্যাটা অর্বাচীন।
মাথা মোটা হচ্ছে দি্ন দিন।
দেখেছিস আমার রাজ্যশিল্পী, বুড়ো পক্ক কেশ
দাঁত খিঁচিয়ে মিথ্যা কথা বল্ল কেমন
বুদ্ধুজীবীদের দিল কেমন ঠেশ ।
কুভাষ কোথায় ছিল ঘাপটি মেরে
এসেই কিন্তু দ্যাখ গেছে ঠিক তেড়ে।
[এরা সব পষ্য বুঝি? তা বললেই হয় সোজাসুজি]
ওরে অবোধ এটা বোঝা তদের কম্ম নয়।
নীল মন্ত্রে দীক্ষা নিতে হয়।
গরীব-মানুষ-মারা, ধর্ষণ, ছিনতাই আর রাহাজানি,
মিথ্যা ভাষণ, শিল্পপপতিদের পদলেহন- এ সব আমরা জানি।
আর আমাদের চিমড়া বুড়ো বি-অবতার,
আমাদের বাঁটুলদি গ্রেট,
কেমন গালাগালির জোয়ার
আদালত আর রাজ্যপালকে দিল কেমন থ্রেট ।
তাইতো আমি বলছি শোন্ আমি মোটেই মু-ম্নত্রী নহি,
আমার আগে পার্টি, আমি তার লেজের ভার বহি।

সাবধান সাবধান,
মূর্খমন্ত্রী উদিকে যাচ্ছেন ।।

রাজ্য পুলিশ

রাজ্য পুলিশ কেমন করে শান্তি রাখে ধরে,
পুলিশরে লেজ বাঁধা যে আজ সিপিএমের ঘরে.
পার্টির কথায় নাচে পুলিশ, পার্টির কথায় ছোটে.
পার্টির কেডার মারলে চাঁটি, ঠোঁট ফুলিয়ে ওঠে.
তালপাতার সেপাই এরা, কেউবা কুমড়োপটাস.
হাতে বিড়ি, পায়ে চটি, চলে ফটাস ফটাস.
ঘুসের টাকায় ফুলছে ভাল এদের টাকার থলি.
গরীব মানুষ হচ্ছে শুধু এদের হাতে বলি.
কেডার করে ধর্ষণ, আর কেডারে নেয় জান
রাজ্যপুলিশ দাঁড়ি্য়ে দ্যাখে- কি কর্তব্য জ্ঞান.
পুলিশবাবু ব্যাস্ত ভীষণ ক্রকেট নিয়ে মাতে.
ব্যবসায়ীরা টাকা ঢালে উপুড় করে হাতে.
কার বিয়েটা ভাঙ্গতে হবে, কাকে করবে যে ঘর ছাড়া
জেলখানাতে পুরতে হবে- গান গাইছে কারা !
বুদ্ধবাবুর জমিদারি, টাটা-বিড়লার রাজ
বড়লোকের পাহাড়াদারী, এটাই এদের কাজ.
এদের টিকি বাঁধা কোথায় সবাই সেটা জানে-
নন্দীগ্রামে শান্তি এরা কেমন করে আনে !

বাতাসী


তুমিকি শুনতে পাচ্ছনা,
তোমরা পাচ্ছনাকি টের
বাতাসীর দীর্ঘশ্বাস;
তার উত্তপ্ত নিঃশ্বাস
শুধুই কি ওড়াবে ছাই নিভে যাওয়া চিতার আগুনে.

তোমরা শোনোনি কেউ
সমুদ্র গর্জন !
উথাল পাথাল ঢেঊ
বুকের ভিতর
কোনোদিন মরেনি কি বৃথা আক্রশে কাল গুনে গুনে !

সন্জীবনীসুধা মাতাল লম্পটের হাতে
করেছ কি পাণ !
আকন্ঠ ডুবিয়ে রেখে পাঁকে
পেরেছ কি বাঁচাতে আত্মাকে !

আমিতো শুনেছি তবু জীবনের গান
তার সরল বিশ্বাসে, তার নিষ্পাপ নিঃশ্বাসে.
তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়া প্রাণ
করেছিল দান.

তোমরা কি জান তাকে ?

সোনার বাংলা

তিন্তি তিতান তিন্তি তিতান
তিন্তি তিতান তিন্নি-
ধাঙ্কা নাকুড় নাকুড় নাকুড়
নাচ্ছে দ্যাখ গিন্নি
নাচ্ছে দ্যাখ পুরুত ঠাকুর
নাচ্ছে দ্যাখ ঢাকিটা
নাচ্ছে দ্যাখ বাবা-মশাই
আর কে রইল বাকিটা!

আর বাকি নেই আর বাকি নেই
আজকে নাচে সব্বাই।
নাচ্ছে কেন সবাই মিলে
ভাবছ বুঝি বসে তাই !
ভেবে ভেবে কুল পাবেনা
এটা নাচের দেশ যে।
নাচে নেচে চলে সবাই
দেখতে লাগে বেশ যে।
ভোটের বাজনা বেজে গেছে
প্রার্থীরা সব ব্যাস্ত
রাস্তা জুড়ে নাচন-কাঁদন
লোক জমেছে মস্ত।
বাবা-মশাই ভোট দেতে যান
সঙ্গে নিয়ে ছেলের দল।
ভোট টা তুমি যাকেই দাওনা
হবে তো সে ই একই ফল।
হাসপাতালে রোগী মরে-
নেচে বেড়ায় ডাক্তার
পুলিশ নাচে ঘুষের লোভে
উকিল পাবে ভাগ তার।
মন্ত্রী নাচেন ভাষণ দিয়ে
ভীষন কর্ম্মকান্ড।
দেশ বেদেশে নেচে বেড়ান
শূন্য তাদের ফান্ডও।
মন্ত্রী নাচেন, কেডার নাচে
নাচেন যত আমলা।
ধাঙ্কা নাকুড় নাকুড় নাকুড়
মরছে সোনার বাংলা ।

রূপকার




বহুদূর, দূরান্তরে, মরূভুমি, বনছায়ে, সাগরে বা আকাশের কোলে
আছ তুমি আমার হদয় জুড়ে ভালবাসা হয়ে.
গোলাপের গন্ধে তুমি, বেল, চাপা, যুঁই
রক্ত ঝরা বেদনাতে- কাটা যদি ছুঁই.
পশ্চিম আকাশে ঐ রক্তিম শযায়
তোমার ঈশারা যেন
জীবন সন্ধায়.
এখনি ডেকনা বন্ধু থাকি কিছুখন-
এপাড়ে জীবন.

তোমায় প্রেমের কথা যতবার বলি
হাস মুখ টিপে.
জান তুমি আস যদি কাছে, মিলন ইচ্ছায়
বিপরীতে মন যায়.
প্রবল পুরুস তুমি
খুধা আগ্রাসী-
দৃঢ় আলিঙ্গন .
ভালবাসি দূর থেকে
তবু চাইনা মিলন.

ভালবাসা আরশিতে যদি ধরা যেত
সে শুধু নিজের ছবি নানা ভঙ্গিমায়
ছড়ান-ছিটান থাকে জীবন খাতায়.
সে ছবির রূপকার তুমি না কি আমি
হয় নাতো জানা.
যতদিন দু-জনার মেলেনা ঠিকানা.

পরস্ত্রী



কপালে ও কিসের দাগ তোমার
একি আমার চোখের ভুল!
মদন-ভষ্ম লাগল যখন চোখে আমর
সামনে কেন এলে তুমি ,
হায় একি ভুল !
কালো চোখের তারায় তোমার
রাতের স্বপ্ন কার তরে ?
হায় রে ও রূপ দেখাল কে
হৃদয় কেন দিলাম তোমায় ভুল করে ।
ভুল করে কি দেখেছিলাম
ভালবাসার ছায়ায় ঘণ তৃষার আগুন ঐ চোখে?
ভুল করে কি ছড়িয়ে ছিলে পলাশ রাঙা মনের ফাগুন এই বুকে?
রক্তে নেশা মাতাল হাওয়া দেয় দোলা,
কেমন করে যায় ভোলা সেই পরস্ত্রীকে
হায় একি ভুল !

প্রতীক

ছবি এঁকে রেখে গেছে কোনো আধুনিক ।
কেউ বলে নীল আকাশে সূর্য অস্ত যায়
করো মতে সূর্যোদয় নদীকিনাড়ায়
নয় নয় ঠিক, সমঝদার বলে এতো
প্রতীক বিদ্রোহের।
মন বলে এ প্রকাশ শিল্পীর প্রেমের।

চিঠি লিখে রেখে গেছে কোনো মনভোলা।
কেউ বলে প্রেম পত্র প্রেমিকার তরে
কারো মতে ষরযন্ত্র আসর্তক ঘরে ।
নয় নয় ঠিক- সমঝদার বলে
এ প্রতীক নষ্ট সমাজের ।
মন বলে এ শুধুই আবেগ প্রেমের ।