Wednesday, March 31, 2010

রজনীগন্ধা

আমার ঘরের কাঁচের ফুল্ভানীতে রেখেছি তোমায় রজনীগন্ধা ,

তোমার মিস্টি গন্ধ লাভা ছড়ায় না ধমনীতে ।

এখন বাইরে ঘন অন্ধকারের বুক চিরে চিরে

চমকে উঠছে বিদ্যুত,

হাস্নুহানার গন্ধে মাতাল

সরীসৃপের মত উন্মত্ত আমিও ।

প্রবল বর্ষণের পর

ক্লান্ত রিক্ত দেহ,

পঙ্কিল ক্লেদাক্ত পথ অতিক্রম করে এসে দেখি

মনের ভুলে জানালা করিনি বন্ধ ,

চূর্ণ হয়েছে কাঁচ,

তাজা রজনীগন্ধা ধুলায় লুটায়, অসহায় ।

তোমার সবুজ দেহ বুকে নিয়ে নিলাম ঘ্রাণ ।

আঃ কি সুন্দর তুমি রজনীগন্ধা ।

তোমাকে দেখে মনে পড়ে সানাই এর সুর

আর কিছু অঙ্গিকার ।

তুমি হতে পারনা বন্য ।

তোমাকে সাজিয়ে রেখে আমি যাই হাস্নুহানার কাছে ,

স্নিগ্ধ সুরভী নিয়ে তুমি থাক প্রতীক্ষায় - আর

আমি খুঁজে ফিরি অরন্য ।

Sunday, March 28, 2010

স্টিফেন হাউস

ছেলে আমার চাকরি পেয়েছিল,
ফুটপাথে বসে আছি তার অপেক্ষায় ।
দূরে ঐ গাছের উপর শকুন বসেছে ,
কি তীব্র ব্যাগ্রতায় ।

দুদিন পাইনি দেখা,
কি জানি কেমন আছে একা একা ,
আমার চখের মনি, প্রাণের স্পন্দন ।
দুরাত ফেরেনি ঘরে ,
বসে আছি তার অপেক্ষায় ।

ছেলে আমার বলেছিল,
মাগো তুমি চিন্তা কোরোনাকো ,
ফিরে এসে খেয়ে নেব যা রেঁধেছ তাই ।
জন্মদিনের পরে দুটো দিন চলে গেছে ,
বসে আছি তার অপেক্ষায় ।

আগুনে ঝলসান কালো মাংসের তাল ,
প্লাসটিকে মুরে রেখেছিল কাছে ,
সে নাকি আমার ছেলে ।
এত দুঃখেও হাসি পায় ।
তোমরা কি চোখের মাথা খেলে ,
আমার খোকার ছবি এই দেখ ,
ঠিক যেন দেবদুত হেসে চেয়ে আছে ,
খোকা ওরে আয় কোলে আয় ,
বসে আছি তোর অপেক্ষায় ।

Saturday, March 13, 2010

আমরা কেউ বুদ্ধ নই


ফুটপাথে মানুষের বসতি দেখেও
না দেখেই চলে যাই, চলে যাও তুমিও
নিজেদের সাজানো সংসারে ।
কারন আমরা তো কেউ বুদ্ধ নই ।
তবু হৃদয়ের তন্ত্রীতে শির শিরে ব্যাথা ,
তবু বুকে সমুদ্র-মন্থন শেষে
যে গরল উঠে আসে ,
সে কালিতে মূর্ত্ত হয় তোমার কবিতা ।
আর আমি সে কাজলে দু-চোখ সাজাই ।

তোমার লেখনী বেয়ে পত্রিকায় উঠে আসে
দরিদ্র পরিবার ।
আর তুমি জায়গা করে নাও
পাঠকের হৃদয় মন্দিরে ।

আমার দু-চোখে কেন জল ছ্বল ছ্বল ,
আমার বুকের মাঝে নীল বিষ ব্যাথা ।
ফুটপাথে সংসার আমিও দেখেছি ,
তবু কেন কবিতায় লিখিনি সে কথা ।

এতদিনে শীতরাতে, গনগনে রোদে ,
কুঁকরে , ঝলসে গেছে ,
দু-চারটে জীবন।
কে তাদের নিয়ে ভাবে ।
তুমি আছে তোমার কাব্য জগতে ,
আমি মরি ঈর্ষায় ডুবে ।

Tuesday, March 9, 2010

ভুত-পেত্নি-দত্যি-দানা

ভুত-পেত্নি-দত্যি-দানা রাজপুত্র রাজকন্যা
কোথায় গেল চলে ।
দাদু-দিদা ভেবেই সারা খোকন যখন দেয় গো তাড়া
গল্প শুনতে এসে ।
সাত সমুদ্র তের নদীর পারে, রাক্ষসেদের ঘরে
রাজপুত্র যেত কেমন পক্ষীরাজে চড়ে ।
সোনার কমল থাকত ফুটে যেত সকল বাঁধন টুটে
সোনার কাঠি ছুঁলে
একশ বছর ঘুমের পরে রাজকন্যে দেখত ঘরে
এল রাজার ছেলে ।
দাদু তখন ছোট্ট ছেলে ঘেঁসটে সুয়ে মায়ের কোলে
ভাবত মনে মনে।
আমি যেন রাজার ছেলে পক্ষীরাজে পাখনা মেলে
ঘুরছি বনে বনে ।
বাঘ ভালুকে পাচ্ছিনাত ভয়
রাক্ষসদের রাজ্য কত, করছি আমি জয় ।
রাজকন্যা ঘুমিয়ে আছে রাক্ষসীদের ঘরে ,
তাকেও আমি আনব যে জয় করে ।

স্বপ্নে দেখা সেই যে রাজার মেয়ে ,
সেই তো দিদা, খোকন দেখ চেয়ে ।
ভুত-পেত্নি-দত্যি-দানা রাজপুত্র রাজকন্যা
যায়নি কোনখানে,
আছে তারা ঘুমের ঘোরে অনেক অনেক বছর ধরে
দাদু দিদার মনে ।