Friday, December 31, 2010

নতুন বছর

হ্যাপি নিউ ইয়ার আসছে শুনছি-
সেটা কি ভাবে আসে রে দাদা-
এলেই বা কি হয় !
ওমা সেত প্রতি শীতেই আসে ,
দেখিস না কত আলো, গান ,
কত খাবারের বাক্স ফেলা হয়,
এইখানে , এই ফুটপাথে -
সে সব বাক্সের গন্ধ চেটে খেলি গতবার ।
কি মজারে দাদা
এবারেও সে আসবে আবার !
গেলবার আমার বাক্সে, দাদা এক টুকর কেক ছিল,
বলিনি কারুকে ;এত লোভ হল,
দাদা, ভাগ দিই নি রে তোকে ।
তবে বলি শোন প্রায় প্রতি বাক্সেই
কিছু কিছু খাবার ফেলা যায় ,
কেউ কিছু বলিনা আমরা ,
যে পায় সে খায় ।
কেন রে দাদা, এরা খাবার দেয় ফেলে ,
আমাদের ডেকে দিলেই তো পারে,
ক্ষিদে না পেলে ।
ক্ষিদে, তেষ্টার ওরা কি বোঝবে বোকা ,
ওরা সখ করে খায় ।
শুনেছি সব টুকু খেয়ে নিলে ওদের নাকি
সন্মান চলে যায়।
সন্মান মানে কি রে দাদা,
সে কেন চলে যায় ?
তাকে তো কোনো দিন ও দেখিনি রে চোখে ,
তোকে কি করে বঝাই ।

Sunday, December 19, 2010

কল্পনার অন্তর্ধান

হঠাত বিদ্যুতের চমকের মতন ক্ষনিকের আলোয়
দেখলাম তোমার এলোমলো চুল
একরাশ কালো মেঘের মতন
ছড়িয়ে রয়েছে বুকে ,
গুরু গুরু দুরু দুরু শব্দ –
নেই কোনখানে ।
কেন সব চুপচাপ ।
তবে কি হঠাত-ই আবার
সেদিনের মতন
ঝড়ের গতিতে এসে ,
খালি করে নিয়ে যাবে আকাশ-
বাতাস জুরে দীর্ঘশ্বাস ;
সন সন বয়ে যাবে
উত্তরে ।
তোমার দু-চোখ
আজ ও কি থাকবে
বন্ধ অন্ধ আবেগে !
এস এস আরো একবার আকাশের থেকে নেমে
আমার এই বুকে
তোমার নরম হাতে জ্বালাও আমায়।
বিদ্যুত চাবুকে জাগে
মৃত পৌরুষ ।
পশ্চিম আকাশ ঘিরে আমার কল্পনা যাক
যাক অস্তাচলে ।
ভোরের আঁচলে করে নিয়ে এস তুমি
আশার আগু্নে আমি সেঁকে নিই
নিভন্ত অন্তর ।।

Tuesday, December 14, 2010

প্রাণের টানে

দূরের মানুষ দূরেই থাকে যদি না ডাক কাছে ,
যেমন দূরে আছে তোমার সুর্য তারা চাঁদ ;
যেদিন বোঝো কে পেতেছে জীবন-জোড়া ফাঁদ ,
বুঝবে বন্ধু তারা তোমার জীবন জুড়ে আছে ।

আমি তোমায় ডেকে ডেকে সারা হলাম তবু,
কে যে তুমি তাই বুঝিনি মিথ্যা ডাকা ডাকি ,
এমনি ভাবে নিজের মন নিজেকে দিয়ে ফাঁকি ;
বায়না ধরে আমায় তুলে ধরতে হবে প্রভু ।

প্রভু-ভৃত্য, বন্ধু-মিতা কোন পথটা সোজা ;
কোন পথটা চলতে গেলে কাঁটার ভাগ কম ,
কোন পথটা ফুরিয়ে গেলেও ফুরাবেনা দম ,
অনেক কিছু হিসাব করে তবেই যায় বোঝা ।

সেই বোঝাটা মাথায় থেকে নামিয়ে রেখে নিচে –
সহজ-সরল হৃদয় খুলে একটু খানি হাস ,
শত্রু-মিত্র ভুলে তুমি শুধুই ভালবাস ;
দেখবে সবাই কেমন যেন দাঁড়িয়ে প্রাণের কাছে ।।

Saturday, December 11, 2010

দাদামনি

কান্না আর না, আমার খুকু সোনামনি
পুতুল কিনে এনেছে দেখ, তোর সে দাদামনি ।
পুতুল আমার ছেলে যে মা ,বউ এনে দাও তবে,
রবিবারের দিনে তাদের বিয়ে দিতে হবে ;
বউ বাজারে বউ পাওয়া যায় ,
লালা চেলি আরে জোর
এনো দোকান থেকে ;
ধুম করে খুব বিয়ে দেব –
তাকিয়ে দেখবে লোকে ।

কিন্তু মাগো –
দাদামনি কোথায় গেল চলে ,
পুতুল কিনে দিল তবু
নিল নাতো কোলে ।
দাদামনি না থাকলে যে হয়না কোনো মজা ।
পুতুল বিয়ে কে দেবে মা, কে সাজবে রাজা ।
কতই হবে খেলে-ধুল, কত না হই-চই ,
সন্ধে হল মাগো আমার দাদামনি কই !

দাদা তোমার গেছে চলে অনেক দূরের দেশে ,
তারা হয়ে জ্বলছে সে যে রাতের আকাশে ।
দাদামনি ছিল আমার সাতরাজার ধন ।
তুই যে আমার চোখের মনি , তারই ছোটো বোন ।
আয় মা আমার কোলে চোখে ঘুম এসেছে ঐ ।
রাত্রি হল মাগো আমার দাদামনি কই ?

Thursday, December 9, 2010

ফেলে আসা মন

আমি রাতের বেলায় সুর্য দেখতে চাই
দিনের বেলায় চাঁদ ,
আমি হাঁটি হাঁটি পা পা ,
নিজের ডান হাত ধরে
পেড়িয়ে যেতে চাই ,
বুদ্ধিজীবির পাতা ফাঁদ ।

আমি মনের খাতায় লিখি কবিতার কথা ,
খাতার পাতায় আকি-বুকি ।
গোদা লোকে খুশী ভেবে ,
ধোপার হিসাব নয় লিখছে রেসিপি ।

আমি নীলবিষে জর্জরীত অন্তর মহলে মারি তালা ,
লোভীর মতন কেউ চেটে খায় ,
চোখের পাতায় ভাসা
সে বিষের জ্বালা ।

আমি হাতের মুঠোয় পেতে চাই
কবির পৃথিবী ,
নখের আয়নায় জীবন ।
কাল তুমি ছিলে আজ ফিরে পেতে চাই ,
সেই ফেলে আসা মন ।

লাগাম টেনে ধর

কবে কখন কেন ।
আমি ফুলের মালা গেথে
তোমার জন্য বসে ছিলাম অধীর আগ্রহে ,
আমি ভুলেও গেছি তা ।
সে হয়ত আমার খেলা
মেয়েবেলার ভুলের ,
সেই সুতোয় আর তো মালা যাবে নাকো গাঁথা ,
বৃথাই তুমি আসছ ফিরে
বারে বারে ,
খুঁজে ফিরছ শুকন ফুলের বাস ।

সেদিনের সেই শ্যামলা সরল মেয়ের,
বুকের ভিতর ফুটত শতদল ,
গন্ধে তার আপনি মাতাল মেয়ের
চোখের কোনায় পদ্মনদীর জল ।
তখন তার চোখের তারায়
স্বপ্ন ঝলমল-
চোখের কোনায় পদ্মনদীর জল ।

তোমার দেওয়া আশ্বাস তার
বুকের মাঝে স্বপ্ন বুনেছিল ।
তোমার আলিঙ্গনের ফাঁদে ,
সহজে সে তাই তো ধরা দিল ।

দিনের কঠিন তাপে ,
শুকন ফুলের মালা ,
হৃদয়নদী শুকিয়ে বালি ,
বুকের মাঝে জ্বালা ।

শ্যামলা মেয়ে আজ সে রুপসী ,
পিছন পানে চায়না ফিরে আর ।
কোমল মনে কঠিন আসন পেতে
বৃথা পুজার করবেনা জোগার ।

সেদিনের সেই শ্যামলা সরল মেয়ে
শিখে গেছে টানতে মনের রাশ ।

বৃথাই তুমি ফিরছ খুঁজে

শুকনো ফুলের বাস ।

মনে পড়ে

জোনাক জ্বলা রাতের অন্ধকারে –
তোমাকে মনে পড়ে –
নাম না-জানা পাখির ডাকের ছোঁয়া –
লাগায় যেন হৃদয়বীনার তারে ।

সেই কবে সেই সোনালি রোদ্দুরে –
ছুটে চলা পাথর বেয়ে
ক্ষুদেনদীর পাড়ে ,
তোমায়-আমায় চোখে-চোখে চাওয়া ।
দুরু-দুরু বুকের পাহাড় বেয়ে ,
তিরতিরিয়ে ঝরণা বয়ে যাওয়া ।

না-বলা সেই প্রাণের গোপন কথা ,
ঝিলিক মারে তোমার-আমার চোখে ।
না-গাওয়া সেই গানের সুরে ,
দোলাত মন সুখে ।

হাতে-হাতে ধরে পথে ছুটে-ছুটে চলা ,
ভুলে যেতাম দু-জনাতে
বয়ে যাচ্ছে বেলা ।
বয়ে গেছে সে-সব বেলা,
হাডিয়ে গেছে দিন ।
আজ আঁধারে দু-চোখ বিলীন-
জোনাক জ্বলা রাতের অন্ধকারে ,
মনের গোপন কপাট খুলে ,
বারে বারে তোমায় মনে পড়ে ।