Friday, December 13, 2013

তাকে ভালবাসা দাও

 

 

আমি উনিশ-কুড়ি, তিরিশ-চল্লিশ আবার ষাটে ও আছি

সুখে-দুখে, অভিমানে অপমানে,

দণ্ডে দণ্ডে পলে পলে

জীবন দেখেছি।;

 

চাওয়া-পাওয়া কখনো মিলেছে হয়তো

কখনো নয়  ;

মৃত্যুর মাঝেও আমি দেখেছি জীবনের জয়।

হেরে গিয়ে জীবনের কাছে- হাত ছেরে পথে

পড়ে গেছে যারা -

নিষ্ঠুর আমি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি,

চোরা বালি ঘিরেছে তাদের

আমি জীবন বেছেছি ।।

 
 সব দেখে এখন জীবন চেটে খাই

পথ চলতে যত টুকু নিতে পারি

তত টুকু চাই ।।

 
জীবন আছে পথ জুড়ে  ,

শেষে অনন্ত অজানা অচেনা অবস্থান-

 
আছে কিনা তা ও নেই কে বলতে পারে;

যত টুকু নিতে পার তত টুকু নাও

পথের শেষে কিছু নেই


ছড়িয়ে রয়েছে পথে জীবন তোমার

তাকে ভালবাসা দাও।।

 

 

 

দাদা

আলা ভোলা দাদা ছিল এক মাথা চুল,

লোকে ভাবত ভারি পাজী তারা বুঝত ভুল।

একা একা ঘরে বসে কি  ভাবত সারাক্ষণ,

বলতো লোকে -চেয়ে দ্যাখ ঐ এক বিকৃত মন;

দাদা আমার ছোটো থেকে ছিলনা এমন ,

ভালবেসে বুকে নিয়ে রেখেছিল  বোন।

বোঝেনি কেউ তাকে একাকীত্ব

অসুখ হয়ে খায় কুরে কুরে,

বোনেরা বড় হয়ে তাকাল-না ফিরে

ততো দিনে দুঃখ ফুল ছড়াল গভীরে ।। 

জানলনা বোনেরা কেউ-

দুরারোগ্য অচ্ছুত ব্যাধিতে  ,

মাংসল দেহ তার খাচ্ছে কুরে কুরে

বড় গন্ধ পুতিময়-রেখনা রেখনা ঘরে-

কি করে কি করে কেউ এতো কামিনা

হতে পারে ;

হায়-

মনে মনে দাদা  ডাকে ‘বোন’ আয় কাছে

লোকে দেখে রাস্তয় মড়া পরে আছে।।

Sunday, December 8, 2013

আমার বনলতা

আমার বনলতা

সাদা শারি নীল পাড় দুটো লম্বা বিনুনি,
নীলাঞ্জন নয় সেতো, তার কথা শুধু আমি জানি ।

আমার বন্ধু ছিল সে বনলতা সেন ;
মুখচোরা রোগা মেয়ে তখন ক্লাস টেন ।

মাঠের পথ ধরে একসাথে হেঁটে  স্কুল ,
পায়ে ছেঁড়া জুতো তার বই নিতে হত ভুল ।

এক দমকা হাওয়ায় সাদা শারি উরে উরে যায় ।
ভিতরের ছেঁড়া সায়া ঢাকে সে লজ্জায় ।
কেন সে চায়না কিছু ভেবে ভেবে আমি আকুল ।
টিফিনের বাটি নিতে হত তার রজ ই ভুল ।

কতনা মানুষ ছিল তার পথে হাত বাড়িয়ে ,
সে সব কাচে নিলে বনলতা জেট হাড়িয়ে ।

বনলতা ছিল উন্মুখ মুক্ত হৃদয়ে মনে ,
চেয়ে ভালবাসা ভালবাসা ,
সে কথা রেখেছিল সে গোপনে ।

মা ছিলনা তার ছিলনা বাপ ,
কাছের লোক কারো কেন ছেড়ে যায় ।
বনলতা তোকে বোঝেনা কেউ
তুই আমার বুকে আয়।।



সূর্যমুখী তুমি এলে যখন



সূর্যমুখী  তুমি এলে যখন ,অর্জুন গাণ্ডীব  হাতে
তোমার অপেক্ষায় 
 তুমি এক গুচ্ছ রোদ্দুর  হয়ে
সাজালে ফুলদানি 
আমি স্বপ্নে ভেসে যাই  

তৃতীয় পাণ্ডব তির বিঁধে ছিল
আমার চারি পাশে ,
আকাশে বাতাসে 

সোনা  রঙ ঢেকেছিল কৃষ্ণ  কালো  মেঘে;
আমি তখনও  ঘুমে কাতর 
আমি তখনও  উঠিনি জেগে  

দিন শেষে  আকাশের  ঘোমটা    খুলে 
অর্জুন  গেল চলে ,

আমার অজান্তে ,
আমারই অন্তরে 
সূর্যমুখী থাকে প্রতীক্ষায় ।



যেদিন ছিলাম উনিশ কুড়ি




ছিলাম উনিশ কুড়ি
আকাশ আমার ভরা ছিল কবিতায়
মাটিতে ছিলনা পা
বাতাস যখন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেত চুল
মন আকুল অজানায় অচেনায়
স্বপ্নে ঘেরা জীবন তখন
ফুলের গন্ধে ভরা
ছিলাম
প্রজাপতি যেন
রঙিন নেশায় মত্ত
ভালবাসায় ঘেরা

বুঝিনি সেদিরি-কেউতো বোঝেনা
যত গান আর কবিতা
সবিতা নিজের জন্য
নিজেরই ভিতর পূর্ণ ।।

আজ ফিরে ফিরে খুঁজি
আজো কি সে আছে দাঁড়িয়ে সেখানে
সে ই স্বপ্নের নারী ,
যে ছিল উনিশ কুড়ি !




Thursday, December 5, 2013

kichu kotha

আমি কিছু
লিখেছিলাম কবির মনস্তাপ 
চোখে কারো পড়লনা তা 
খোলাই পড়ে থাক !

আমি কিছু 
দিয়েছিলাম ভালবাসায় ভরা 
গ্রহণ তাকে করলনা কেউ ,
রাতের আকাশ ছাড়া !

আমি কিছু
চেয়েছিলাম অল্প একটু সুখ 
সবার ই হাত খালি 
কে যে ভরিয়ে দিল বুক .

সন্দেহ

এই খোলা আকাশ বাতাস এ খানে ও বন্দী বাস করে 
অবিশ্বাস সন্দেহ ঘিরে থাকে 
সহজ সরল জীবন করে 
গলাচাপা অন্ধকার 
বলব কি বলবনা ভেবে ভেবে 
দিন কেটে গেল 
অনেক বছর পার করে এসেছি দ্বিধায় 
থেকেছি বুকচাপা যন্ত্রনায় 
এখন এড়িয়ে যাই সাবধানে 
যার মনে 
আমার জন্য প্রতি পদে পদে 
তীক্ষ্ণ বিচার 
শেষ বেলায় সে আশ্রয় 
দুরে থাক - যত দিন আরো আছি
পৃথিবীটা ভালোবাসাময় 
আমার ছোট্ট মাটির ঘর
আদিগন্ত খোলা 
সেখানে এস বন্ধু সময় অসময় ..

সহজ কথা

সহজ কথা
সহজ ভাবে বলতে পারা সহজ নয়,
রবি ঠাকুর এই কথাটা
বলেছিলেন এক সময় ।
কিন্তু
আমরা যারা যত আছি।
এই কালে আর এই দেশে,
সহজ সরল ভাবনা-গুল
জট পাকিয়ে ভীষণ জটিল;
চালাক চতুর নেট প্যাকেজে,
তৈরি মানুষ যাচ্ছে ভেসে ।
তির্যক আর  ঠাণ্ডা লড়াই-
মোবাইল আর ইন্টার নেটে।
দিনের শেষে ঠাই পাইনা-
কোথাও কারো মনের ভিতর।
সুধুই দেখি যন্ত্র মানুষ,
ঘুরছে ফিরছে মেকী হেসে, রঙিন বেশে
আধুনিক এই জগতটাতে
মানুষ দূরে যাচ্ছে ভেসে ।।

আমাকে বাঁচাও

আমি উদ্ভিদ , সবুজ শ্যামলা ঘাস 
আদিগন্ত ছেয়ে থাকি 
আমার বুকের পরে 
কচি কচি ঘাস ফুল মাথা তুলে চায় 
আকাশে তাকায়
আমি মহীরুহ হয়ে মাটি কামড়ে থাকি
আম জাম বট ফলে ডাল পালা ঢাকি 
বেল যুই গোলাপের গাছে 
প্রাণ পেতে রাখি 
আমি প্রকিতির দান 
আমি তোমাদের কন্যা সন্তান 

চারি দিকে কান পেতে শোনো 
প্রকিতি বলছে ডেকে 
সবুজ বাঁচাও 
সবুজ ধংশ শেষ হলে 
পৃথিবীটা অগ্নি গর্ভে যাবে চলে -
তোমরা কি চাও !
আমি তোমাদের কন্যা সন্তান 
আমাকে বাঁচাও 

ঘর ভেঙ্গে আয় চলে

আমার মনের থেকে এক পল দূরে জঙ্গি বাস করে,
অট্টহাসি হাহাকার এক সাথে ঘোরে
আমার অন্তরে ।।

আমার জানালা দিয়ে দিনের প্রথম আলো উঁকি দিয়ে যায়,
কেন সে থাকেনা ঘরে- মন করে হায় হায়।।
অট্টহাসি হেসে জঙ্গি চিঠি লিখে যায়
আমার দরজায় ।।

ভেঙ্গে ফেল মনের কপাট
জানালা দাও খুলে,
চেয়ে দ্যাখো আকাশটা অসীম ব্যাপ্তি নিয়ে
অনন্ত যাত্রায় ভেসে যায় ,
তোমাকে ডাকছে আয়
ঘর ভেঙ্গে আয় চলে  ।

জঙ্গি তোমার ফাঁদে দেবনা তো পা,
সভয়ে বন্ধ করি জানালা দরজা ।।
জঙ্গি তবু ডাকে যে আমায়- আয় চলে আয় ।।

আমি শিউরে উঠি ভয়ে ।
বড় চেনা ঘর আমার ;
কি বা আসে যায়,
যদি আলো ফিরে যায় ।
দেয়ালের ইট কাঠ গুনে গুনে
দিন কেটে যায় ।।

আমি ষোলো আনা পাঠক চাই ।



তোমরা কি আমাকে ভাল বলছ নাকি তাকে খারাপ
বাহবা পেতে কার না ভাল লাগে,
কিন্তু বুদ্ধি বলছে যেখানে এত ঈর্ষা এত রেষারেষি
সুবিধার মনে হচ্ছে না হাত তালি ;
মনের ভিতর খুলে যাচ্ছে না পদ্ম কোরক,
রন্ধ্রে রন্ধ্রে পুলক দূরাগত –
এস কাছে বস পাশটিতে,
কবিতার জগতটিকে বরণ করেছ কি
দিয়েছ কি মন প্রাণ ভালবেসে ;
শেষে দেখা গেল গোল টেবিলের আড্ডায়
সারি গয়নার ঝলকে ম্লান
কবির কবিতা ।
কার সারি মেকি সিল্ক, কারো বা গহনায় ভেজাল,
পাণের পাত্রে তুফান উত্তাল ;
এক সুন্দরি বলে – ও মা দেখেছিস
কি ভয়ানক দেমাকি অমুক-
একটু কিছু লিখেছে তাই ফুলে ভল্লুক,
দিয়েছি ফুটো করে বেলুনের গ্যাস-
ভাল বল, হাত তালি দাও জোরে
একে চোখে ঠেলে – ও কে তোল-
ব্যাস, মাফ কর চাইনা এমন
পরে পাওয়া আঠার আনা ।
কারণ আমি ষোলো আনা পাঠক চাই ।।