Monday, February 28, 2011

রেখেছ বাঙালি করে মনুষ করো নি

সকালে উঠে দেখি গ্যাস নেই ; একি –
কেরোসিনের ডিব্বাটাও যে খালি ।
দেবার জন্য এক কাপ গরম চা
কাঠকয়লা দিয়ে উনুন ধরায় মলি ।
চা খেয়ে মনটা হল শান্ত ,
মা বললেন খোকা, দুধটা কিনে আনত ।
চল্লিশ কবে গেছে চলে,
মা এখনো ডাকে খোকা বলে ।
চার প্যাকেট দুধ এনে দিলাম মলির হাতে ,
বলে এলাম মাকে- রাতের বেলা একটু খানি
পায়েস দিও পাতে ।।
থলি হাতে নিয়ে, জামা দিলাম গায়ে ,
দেরাজ থেকে টাকা নিয়ে চটি দিলাম পায়ে ।
কিনে নিলাম চারখানা ডিম ,
কিলো খানেক আলু আর শুকনো কটা সিম ।
মাছের বাজার ভীষন চড়া
সবজি কিছুই যায় না ধরা ,
সিম আলুটা ছাড়া
বাজার ভীষন চড়া ।
বাজার দেখে মলিরানীর মুখটা হল কালো ।
এমনিতেও সে দেখতে নয়কো ভালো
তার উপরে রাগলে দেখায় কালো ।
ব্যাস্ত হয়ে তাড়াতাড়ি গামছা কাঁধে নিয়ে ,
দরজা দিলাম স্নানের ঘরে গিয়ে ।
গায়ে মেখে তেল দিলাম খুলে কল ,
কিন্তু একি কলে নেইকো জল ।
ছাড়া জামা নাচার হয়ে
নিলাম পরে গায়ে –
বালতি হাতে নিয়ে পথের ধারে যাই ।
পথের কলে বিরাট লাইন
সাধ্য নেইকো ভাঙ্গব আইন;
ফিরে এলাম চলে ;
বৌকে ডাকি – ভাত দাও গো বলে ।
গামছাখানা হাতে নিয়ে প্যাকেট করি
রেপিং পেপার দিয়ে ;
হাজিরার খাতায় সই করে
স্নানটা নেব সেরে ।
গিন্নিকে করতে খুশী
জোর করে মুখে টেনে হাসি ,
আলুনা সিমের চচ্চরি গলাধ্বকরন করি ।
মাকে বলে ‘আসি’ ছুটলাম তাড়াতাড়ি
ন’টার বাসটা গেল বুঝি ছাড়ি ।
শুনতে পেলাম পিছন থেকে
গিন্নি আমার বলছে হেঁকে –
আজকে যেতে হবে দিদির বাড়ি-
আপিস থেকে ফিরো তাড়াতাড়ি ।
অফিসে দেখি মহা হট্টগোল
মহনবাগান কাল খেয়ে গেছে গোল
ইস্টবেঙ্গলের সাপর্টার আমি ।
নিয়ে গেল একশ টাকা কান ধরে টানি ,
মিষ্টি খেতে হবে আজ,
কাল কাল দিয়ে গোল ; ভারি গন্ডোগোল ।
অফিসেও আজ দিনটা গেছে ভারি মন্দ
সুন্দরী মিস সেন করেছ কথা বন্ধ ;
ছুতো-নাতা নিয়ে কতবার গেছি পাস দিয়ে
মুখে নেই হাসি – বড় বড় হাই তোলে
চোখ করে বন্ধ ।আজ আমার কপালটা মন্দ ।
অফিসের বড়বাবু হল ঘরে এসে
হেসে হেসে বললেন নাকি সুরে কেশে ;
কি করেছেন হরেন বাবু , ইংরাজী যে হল কাবু
স্পেলিং সে তো কবেই গেছেন ভুলে ,
গ্রামার বুঝি খেয়েছেন গুলে !
চেয়ে দেখি মিস সেন এতক্ষনে হেসেছেন ,
ভারি ন্যাকা মেয়ে ।
রাগ চেপে মনে
হাঁটা দিলাম বাস ধরবার টানে
এসে দেখি বাপরে কি কান্ড-
মিছিল চলেছে প্রকান্ড ,
হাতে নিয়ে নাল নীল ঝান্ডা ,
বাসের আশা করে দিল ঠান্ডা।
বাসের আশা ছেড়ে
পা বাড়ালাম হাঁটা পথ ধরে ।
অনেক কষ্টে এলাম যখন বাড়ি ;
দিন্নির মুখ দেখি যেন তোলা হাঁড়ি ।
রসিকতা করে বলতে গেলাম ‘সখী
এলাম ফিরে ‘।
থ্যাবড়া নাক ঘুরিয়ে , মোটা শরীর মুরিয়ে
গিন্নি গেলেন ফিরে রান্না ঘরে ।।
খেতে বসে দেখি, পায়স নেই –এ কি!
চেঁচিয়ে ডাকি মাকে –বলি খেতে দাও না দেখে ?
পায়েস কোথায় গেল ?
মা বললেন এসে –কি করি আর বল –
ছিল নাতো জানা , প্যাকেটের দুধ আসলে ছানা ।
আজ তোর কপালটা মন্দ ,
সকাল থেকেই দুধে ছিল টক টক গন্ধ ।।

সকাল থেকে যে রাগটা রেখে ছিলাম চেপে ;
এবার বুঝি উঠল সেটা ক্ষেপে ,
আমার ছোট্ট ছেলে, ঠামার কোলে বসেছিল
হাত পা মেলে ।
তার কানটা ধরে , দিলাম কষে চড় ,
রেগে বলি –যখনি দেখি কোলেই আছে বসে –
তোর নেইকি পড়া লেখা ?
ছেলের চোখে দেখি জলের রেখা ।
নিজের উপত হল ভীষন ঘৃণা ,
আমার অক্ষমতার নেই দেখি সীমা ,
সব অপমান সহ্য করি মাথা করে নিচু ,
অন্যায় অবিচারে বলিনাতো কিছু ।
এসে ফিরে ঘরে , অসহায় ছেলেটাকে মেরে
শোধ তুলি । মুখে বলি আদর্শের বুলি ।
ধিক আমি অক্ষম পুরুষ –
সপথ নিলাম আজ থেকে হব আমি মানুষ ।
আমার চিন্তার শ্রোত গেল থেমে ,
মনে হল ঘরের ভিতর বাজ এসেছে নেমে ।
মুখের সামনে ড্যানা নেড়ে
গিন্নি দেখি বলছে তেড়ে –
আজ রাতে হবে নাকি শোয়া ,
অনেক্ষন তো হয়ে গেছে গুষ্টির খাওয়া ।
সুবোধ বলকের মত গিন্নির পিছু পিছু ,
চললাম শুতে আমি মাথা করে নিচু ।।

Sunday, February 27, 2011

আমার শহরে এখোনো পাওয়া যায়

আমার শহর খুঁজে দেখো মিতা
একপায়ে দাঁড়িয়ে আছে কেউ ভালবাসা নিয়ে ।
এখনো একপাশে একলাটি
চোখ পেতে পিচের রাস্তায় ।
ভালবাসা যদি কেউ বিকায় ...
সস্তায় । কেউ যদি বিনিময়ে
অর্থ না দিয়ে শুধু অপমান
করে বিতরন – বলা যায় না ,
যার কিছু নেই ,
অথবা কিছুই যে নয়
কিছু পাবার আশায়, ভালবাসা দিয়ে
কিনে নেবে অপমান,
মেখে নেবে গায় ।
তার ভালবাসা টল টলে
ফুল হয়ে দুলবে গলায় –
এ সমাজে যার কিছু পরিচয় আছে ,
অথবা যে ‘কেউ কেটা’ হয়

Friday, February 25, 2011

যা গেছে তা যাক

কেউ হতে পারত বন্ধু
কেউ হতে পারত প্রিয় ,
বলতে পারত কেউ
যদি যাও , সুখ স্মৃতি রেখে যেও ।
বার বার ভাবে এ হৃদয় ,
হয়ত হয়েছে ভুল , এমনও তো হয় ।
হয়ত রয়েছে কারও বুকে
স্নেহ কোনো গোপন কোনায় ।
বলবে হয়ত কেউ –
ভুল করে ভুলেছি তোমায় ।
হয়ত রঙ্গিন যত ফেলে আসা দিন
আজ শুধু ভষ্ম নয়।।

নিশ্চয় জানে প্রাণ-
হয়ত-র নেই স্থান –
যা এসেছে ফেলে –
তাকে ফিরে পেলে ,
হবে শুধু মোহ ভঙ্গ আজ –
যা গেছে তা যাক ।।

ভালবাসা

আমি যে দিতে চাই ভালবাসা
পেতে চাই আরও
কি করে কি করে তুমি
দূরে রাখতে পার
তোমার শরীর ছেড়ে আমি
চাইনাতো কাছে পেতে সোনার মন্দির ।
তোমার নিঃশ্বাস বইছে আমার প্রাণে –
আমার বিশ্বাস –
তুমি আজো শুধু যে আমার ,
আমার অন্তর জুরে থাকে
যতখানি প্রেম
আজ দূরে আছ তবু
সবি আমি তোমায় দিলাম ।।

ইচ্ছে

খুব ইচ্ছে করছে
আমার কাজলে আর
লিপ্সটিক দিয়ে
তোমার মুখটাকে
সাজিয়ে দিতে
রেড ইন্ডিয়ানদের মতন ।
আর যত কাজ
সব ফেলে তোমাকে
ছুটিয়ে নিয়ে যেতে
মাঠের ওপর দিয়ে
অনেক অনেক দূর ।
সেখানে আকাশে বাতাসে
সোনালী রদ্দুর –
ঘাসে ঘাসে ফরিং আর প্রজাপতি ।
গাছে গাছে ফুল ।
আকাশ শুকনো দেখেও
তুমি বোকার মত বলবে –
এমা হয়ে গেছে ভুল ,
আনি নি যে ছাতি ।।

আরতি

বিনা স্বরে কে করে শাসন
কার শূণ্য অন্তরে
বিনা ডোরে
বাঁধা পরে গেছি !
নেই সিঁড়ি তবুও এসেছি
প্রেমের মন্দিরে-
বিগ্রহ নেই
ভাল তবুও বেসেছি ।
আয়োজন নেই কোনো
তবু সাংগ করেছি আরতি ।
এই ঘরে এই
প্রেমের মন্দিরে –
নেই শিখা তবু
রোজ জ্বেলে বাতি।
বিনা আয়োযনে সাঙ্গ করেছি
আরতি ।।

সোহাগবালা

সোহাগবালা সোহাগবালা
দুয়ার খোলো তোর ।
রাত গিয়েছে চলে সোহাগ
এসেছে আজ ভোর ।
দুয়ার খোলো সোহাগবালা
রাত হয়েছে ভোর ।।
ছেঁড়া কাপড় ফেলে সোহাগ
নুতন কাপড় পরো ।
নতুন রঙ্গে সাজিয়ে ডালা
প্রভাত বরণ করো ।
সোহাগবালা সোহাগবালা
নতুন কাপড় পরো ।
পুরান তোর মালাখানি
দাও গো ছুঁড়ে ফেলে –
নতুন মালা গাঁথো সোহাগ
শিশির ভেজা ফুলে ।
রাতের সাথে বাসি কান্না
দাওগো বিদায় আজ
দুঃখ-সুখের সাজিয়ে ডালা
এল সুখের সাজ ;
সোহাগ রে তোর দুঃখ গাঁথ
সুখের সুতোয় আজ ।
দুয়ার খোলো সোহাগবালা
পর নুতন সাজ ।

ভালবাসি ওকে

মনে হয়েছিল-
ভুল পথে চলেছি, যেন
কোনো স্বপ্নাবিষ্ট মোহোগ্রস্থ
নেশাতুরের মতন,
পতনের দিকে ।
সুন্দরকে মনে হয়েছিল
অসুন্দর।কুয়াশা যেমন
গতি রোধ করে-আবছা করে
দৃষ্টিকে। একটুখানি পাপবোধ
গ্রাস করে সত্যকে ,
মিথ্যা নয়
ভালবাসি
ওকে ।।

চাওয়া পাওয়া

শুধু একটু খানি চাওয়া –
তাও পারনা দিতে –
লজ্জা কেন হয়না তোমার
হৃদয় কেড়ে নিতে !
অসম্ভব কথা আমার
ঘুরছে মাথায় যত ।
ভেসে গেছে তোমার ঘরে
বলছেনা ঠিক মত ।
হৃদয় চাও, জীবন চাও
সবই তো চাই দিতে।
দিলাম যখন উজার করে ,
পারলে নাতো নিতে ।
ভেজাল নেই সমর্পনে
খাঁটি দুধের মত
লজ্জারাঙ্গা রক্ত এখন
বুকজোরা এই ক্ষত,
তাও পারি যে দিতে –
যদি প্রিয়- এ দান তুমি
খুশী মনে নিতে ।।

নয়ন

এখনও তো হল না জানা
শুধুই কি অনুতাপ
আর কিছু নয় !
ভয় হয় যদি
সাগরের মতন গভীর না হয়-
শুকনো নদীর মত
বালি পরে চোখে ।
ঐ চোখে চোখ রেখে
তাকে
আজও তো দেখা হল না ।
সাহস হয়না
আয়না থেকে
সরিয়ে রেখে চাইতে সোজাসুজি ।
বুঝি বুঝি করেও তবু
বোঝা তো গেল না ।
ভাল না ভাল না করেও তবু
ঠকান গেল না
মনটাকে ।
ভালবাসি হল শুধু –
মন দেওয়াই হল সার ।
জীবনটা ছাড়খার-করল নয়ন যার
তাকে আজও নয়ন ভরে
দেখাও হল না ।।

আমি দুঃখে যাব মরে

কষ্ট এখন কষ্ট বলে হয়না মনে,
কারন স্বার্থপরের মত
মনকে আমার তোমায় ঘরে পাঠিয়েছিলাম
চিরদিনের মত ।
দেখা তো আর হয়না তোমার সাথে
তাই মিনতি মোর
আদর কোরো প্রভাত বেলায়
ভাঙ্গলে ঘুমের ঘোর ।
আমি তো আর থাকব না সেখানে,
লজ্জা পাবার হয়না যে তাই মানে ।
যেমন খুশী তেমন ভাবে
দেখো- শুধু তোমার
বুকের মাঝে রেখো
দিও না দূর করে ।
এমন যদি করো তবে
দুঃখে যাব মরে ।।

।আদম ইভ

এমন বাদলার দিনে যদি পেতাম ছুটি
জীবন থেকে, সমাজ থেকে
আপন হাতে গড়া
আমার সংস্কার থেকে ।
তবে যেতাম চলে –
অনেক অনেক দূরে ;
তোমায় দিতাম ডাক ,
বয়সটাকে বলতাম
তুই এখন থেমে থাক ।
সুর্য যেত নেমে যখন
পশ্চিম প্রান্তরে –
যেতাম ছুটে ছাতিম তলায়
তোমায় ও হাত ধরে ।
বৃষ্টি হত শুরু তখন
চমকাত বিদ্যুত –আকাশের বুক চিরে
আমার বাহুলতা তখন
রাখত তোমায় ঘিরে ।
আমার চোখে তাকিয়ে তখন
বলতে তুমি কি যে –
সেই কথাটা তুমিই বল নিজে ।।

Saturday, February 12, 2011

খেলা

বাবা তোমায় ডাকিনি তো কোনো দিনও
তাই করেছে রাগ ?
আজকে শুধু তোমার সাথেই করব খেলা ভাগ ।
মা তো কবেই গেছে ছেড়ে নিরুদ্দেশে ,
ভাই-বোন নেই কোনো
বাবা তোমায় থাকতে আমি দেব না ঘর-কুনো ।
লঙ্কা, চেতন, টোটো, নয়ন ,
থাকুক ঘরে বসে ,
আজকে শুধু তোমায়-আমায়
জমবে খেলে কষে ।
তবে চল বেড়িয়ে পরি
নীল পাহাড়ের দেশে ।
সবুজ সাগর সফেন ঢেউ
যার পায়েতে মেশে ।
ঐখানেতে পাহাড় ঘিরে গভীর জঙ্গল –
আঁধার রাতে হায়না যাবে হেসে ।
তোমার বুকে থাকব ভয়ে ঘেঁসে ।
দূরের থেকে দেখব কেমন চাঁদনি রাতে
ইতি- উতি চেয়ে –
হরিণছানা জল খেয়ে যায়
ঝরনা ধারায় গিয়ে ।
বাঘ ডাকবে হুম হুম হুম –সিংহ কেশর ফোলা
আমরা দুজন থাকব আপন ভোলা ।
হাতির দল শুঁড় দুলিয়ে চলবে হেলে দুলে
সঙ্গে ওদের ছেলে পুলে –
তবু আমরা পাব নাতো ভয় –
বল দেখি বাবা –সেটা কেমন করে হয় !
তাও জাননা- হেরে গেছ
খেলায় আমার সাথে ।
তুমি আমি যাব সেথায়
আমার কল্পরথে ।।

গান

ওরে আমার নতুন পথের দিশারী
তুই খাঁচায় কেন পুরতে চাস প্রাণ ,
আকাশ ডাকে, বাতাস ডাকে
সাগর ডাকে যাকে,
খাঁচায় বসে কেমন করে
গাইবে সে তোর গান ।

তোর সবুজ প্রাণের প্লাবনে
তুই ভাসিয়ে দে তোর সুর ।
বন্দী পাখী ছাড়া পেলে
গাইবে সে ভরপুর ।

ওরে আমার নতুন পথের দিশারী -
তুই খাচায় কেন ধরতে চাস গান ।
ছন্দ-তালের সীমানা যাক ছাড়িয়ে -
সুরের স্রোতে গান তোর যাক হারিয়ে-
নতুন জগত্ শুনুক তোর
হৃদয় বীনার তান ।

মানুষ ও মেয়েমানুষ

আমি যে পাগল নই আর সবার মতন
মানুষ শুধু মেয়েমানুষ নই–সে কথা বোঝাতে বোঝাতে
একে তাকে সব্বাইকে হাঁড়ির হাল । মাঝে মাঝে
মনে হয়, পাগলা গারদে জন্মেছি আমি আর আমার
সন্তানেরা । মা বলেন, ভাবিসনা কনা –মালক্ষ্মী
ভরিয়ে দেবেন ঝাঁপি তোর ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে । লক্ষ্মী
না হলেও কার্ত্তিক ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলে আমায়।
পাঁচবারে পাঁচটি প্যাঁকাটি কালো কন্যা বাড়ির আগাছা ।
অলক্ষ্মীর মুখে ঝ্যাঁটা মেরে তাই ষষ্ঠীর আয়োজন ।
যত বলি – ভুল হচ্ছে তোমাদের –লোকটিকে নিয়ে
যাও বদ্যির কাছে-পরীক্ষা দরকার ।এ সব আকাশের
দেবতার কর্ম্ম নয় । এ তো দেখছি বড় ভয়ানক
পাগল , অবিশ্বাসী, শয়তান মেয়েছেলে । এবারেও
যদি ছেলে না বিয়াস, পাঁচ মেয়েকে তোর মারব
গলা টিপে । তাই আজ পাঁচ মিনিটেই পাগল হয়ে
হনুমানের মতন নিজের আঁচলে দিয়েছি আগুন-
পোড়াতে হবে এই লঙ্কাপুরী ,সাথে নিয়ে পাঁচ অভাগী
কন্যা, পেটে আর এক ; আর এ সবের জনক আমার
ঠাকুরটি- নিশ্চিন্তে নিদ্রামগ্ন , পায়নি টের আগুনের
মাঝে তার শোবার আয়োজন ।

Thursday, February 10, 2011

২১ শে ফেবরুয়ারি

২১ শে ফেবরুয়ারি

রাস্ট্রভাষা বাংলা চাই, বাংলা চাই
চেয়েছিল কিছু তরুন প্রাণ ।
বুলেটের ঘায়ে ছিন্ন ভিন্ন হল যে
পাঁচটি কোমল জান ।
লাঠি বা বুলেট পারেনি করতে দমন -
প্রাণের ডাক ।
ঝাঁপিয়ে পরেছে বাঙ্গালী তরুন
প্রাণ যাক জান যাক ।

ভাষা আমাদের বাংলা ,
আমরা বাংলাকে ভালবাসি ।
কত গুলি পার চালাও তোমরা -
প্রাণ দেব রাশি রাশি ।

আগুনের মত ছড়িয়ে পরেছে
লেলিহান শিখা সম ।
শত-সহস্র বাঙালি এগিয়ে
বুক পেতেছিল যেন ।

বিফল হতে দেবনা আমরা -
জীবনের বলিদান ।
দমকে দমকে বাজে বাতাসেতে
বাংলা মায়ের গান ।

কত দশকের পরে আজ
সেই একুশে ফেবরুয়ারী ।
এসেছে বন্ধু ,
এস আজ পথে ,
এক সাথে গান ধরি ।

ধন্য বাংলা, ধন্য বাঙ্গালী
ধন্য বাংলা ভাষা ।
এমন দিনে যে পূর্ণ হয়েছে
বাঙ্গালী প্রাণের আশা ।।

Tuesday, February 8, 2011

বুকের পানপাতা

আমার হাতে কলম
সামনে সাদা কাগজ,
বুকের ভিতর একটা চাপা কস্ট।
আমি জানি-
দেখতে পাচ্ছি স্পস্ট
বীনাপানি আজ আমার উপর
হয়েছেন ভারি রূষ্ঠ ।

গুরু-চন্ডালে মেশা-মিশি,
সেন্টের শিশি ,
দেশী ও বিদেশী
ভাষাকে করেছে ভ্রষ্ট ।
সবাই আঙ্গুল দেখিয়ে বলছে ,
দেখ তোরা মেয়েটা নস্ট, মেয়েটা নস্ট ।।

বলছিলাম না বুকের মধ্যে
চাপা কস্ট।
হ্যাঁ টের পাচ্ছি স্পস্ট,
সতী সেজে পাশের বাড়ির মেয়েটাকে –
যত দিয়েছি মনোকষ্ট –
তাই আজ বুমেরাঙ্গের মতন
আমার বুকের পানপাতায়
লিখেছে স্পষ্ট – মেয়েটা নস্ট, মেয়েটা নস্ট ।।
এমনটাই ভেবেছিলাম তিন যুগ আগে –
মেয়েটা কবে হয়ে গেছে মহিলা –
চামড়য় নেই টান, চুলের কলপ স্পষ্ট ,
তবুও বুকের মধ্যে সেই ব্যাথা
ফিরে আসে বার বার –
ভারি কষ্ট, চাপা কষ্ট ।
এ সব কিছুর জন্যই দায়ী
সেই ব্যাটা কলির কেষ্ট ।।
শুনতে পাচ্ছি মাথার ভিতর বসে
বুদ্ধিবুড়ি আঙ্গুল নাড়ছে –

বেহায়া বটে, তুই নস্ট,তুই নস্ট ।।

Monday, February 7, 2011

মাছি মারা

আশায় আশায় বসে আছি দিন গুনে আর পথ চেয়ে
নাকের ডগায় উড়ছে মশা দেখছি তাদের মন দিয়ে ।
মাছি মারাই কাজ যে আমার মশা পেলেও মারব না,
মাছি মারার কায়দা জানি, মশার সাথে পারব না ।
এই তো সেদিন দুপুর বেলা বেয়ারা এসে হাঁক দিল ,
এসে গেছে অনেক মাছি বড়সাহেব হাঁকছিল ।
কোথায় গেল আলস্য আর কোথায় গেল ঘুমের ঘোর ,
মারব মাছি ছুটির পরে, শুরু হোল সে তোর-জোর ।
ছুটির পরে কায়দা করে দশটা মাছি মারার পর ,
মাথায় হল বেদম ব্যাথা, এসে গেল ভীষণ জ্বর ।
বাড়ি গিয়ে বদ্যি ডেকে পথ্য খেয়ে অতঃপর ,
সারল গিয়ে মাথার ব্যাথা, ঠান্ডা হল গায়ের জ্বর ।
পরের দিনে এসে দেখি অফিস জুরে হুলুস্থুল ,
সাহেব গেছেন ভীষন খেপে হুলোর মাথায় ভুলোর চুল ।
মাছির নাকি গোঁফ রয়েছে নাকের উপর খর খরে ,
হুলোর মতন লেজ রয়েছে লাফ দিয়েছে খুব জোরে ।
লাফের চোটে ফাইল ছেড়ে টাকের উপর যেই না বসা ,
মাছি কোথাও নেই রে তখন, হয়ে গেছে সে এক মশা ।
এসব নিয়ে নানান কান্ড হচ্ছে যখন অফিস জুরে ,
বিকট সুরে হাসছে তখন পাশের বাড়ির চারটে উড়ে ।

আমি তখন কাষ্ঠ হেসে বুঝিয়ে দিলাম পরিস্কার ,
এসব হচ্ছে পাগলা মতন বিঞ্জানীটার আবিস্কার ।
মাছির গায়ে মশার রক্ত এমন দেছে মিশিয়ে ,
যেই মেরেছি ফাইল দেখে রক্ত গেছে বিষিয়ে ।
আমার কোনোই নেই এতে দোষ
মাছিই যদি না হয় তবে ,
মাছি মারতে আমার কাছে পাঠিয়ে দিলে
এই তো হবে ।
ব্যাপারখানা বুঝতে পেরে সাহেব বলে চুলকে টাক,
বিঞ্জানীটা বেদম পাজী চাকরি যাবে তো তার যাক ।
মাছির গায়ে মশার রক্ত এ সব কথা শুনতে পেলে ,
পুলিশ এসে ধরবে আমায়, পুরবে আমায় কালকে জেলে ।

সেই থেকে ঠায় বসে আছি মশা পেলেও মারব না।
মাছি মারার বিদ্যা জানি মশার সঙ্গে পারবনা ।

তোমার শাসন

তোমার চশমা আমার দৃষ্টি করে খাটো;
তোমার শাসন বন্ধ রাখে আমার কান দুটো ।
তোমার কাছে সবই সাদা-কালো ,
শুধুই দিনে দেখ তুমি আলো ।।
তোমার আঙ্গুল বারণ শুধু করে ;
এগিয়ে নিয়ে যায় না কেন আমার এ হাত ধরে ।।

আমার চোখে যদি দেখতে -
দেখতে পেতে বালির পাহাড় পেড়িয়ে মরুদ্যান ।
শুনতে পেলে আমার মতো-
ভেসে আসত তোমার কানে
রুদ্ধ দ্বারের ওপার থেকে শিকল ভাঙার গান ।

আমার রঙে রাঙতে যদি তুমি,
হয়ত আমায় রাখতে না আর শাসন দিয়ে বেঁধে ।
আমার পথে চলতে যদি -
ফুল তুমি রাখতে গাছে
তাকে মালায় করে রাখতে না আর গেঁথে ।।

এস হাত দাও তো হাতে, চশমাটা নাও খুলে,

ভালবাসা সেখাই তোমায়, শাসনটা যাও ভুলে ।।

Saturday, February 5, 2011

নায়ক

নায়ক

তার টান টান শরীর,
ঋজু , দৃঢ় ভঙ্গিমা ,
সোজা সরল দৃষ্টি
বিদ্ধ করে আমার অন্তর ।

কেউ নয়, সে আমার কেউ নয়
তবু থেকে থেকে মন চলে যায় ।
কি করছে সে এখন , কোথায়, কি বেশে !
তার চোখ হাসে আর আমার মন ডোবে
সুদুর অতলে ।

তার কথা এত করে ভাবা –
এ কি অনুচিত ? এ কি অনাচার ?
কে বলে দেবে। মনের ভিতর বসে
ভন্ডামী মাথা নারে ।
কিছু না কিছু না দোষের ,
তুমি ফিরে চল ঘরে ।
কি করে যে ফিরি-
আমি তো ডুবেছি গলা জলে ।

তবু আমি এখনো শুকন খটখটে ,
প্রেমবারি ভিজায়নি আমায় ।
আমি যার কথা ভাবি –
সে চেনেনা আমায় ।

।আমার আকাশ

জানলা থেকে আকাশ
সেখানে মেঘের আলপনা ,
চেয়ে চেয়ে দেখি ।
চুপি চুপি রাত আসে
ফুটতে থাকে তারা –
একটা দুটো করে ,
নীলাম্বরে হিরের কুচিরা ।।

আমার আকাশে আর সুর্য ওঠেনা
শুধু অস্তে যায় ।
এ আকাশ ভরে ওঠে গোলাপী আভায় ।
আমি চেয়ে চেয়ে দেখি ।

আমি কান পেতে শুনি –
নীড়ে ফেরা পাখি ডাকে
ডানা ঝাপটায় ।
আমি কান পেতে শুনি
আশে পাশে সবখানে পৃথিবী ঘুমায় ।

ঘুমের সে দেশে আমি ক্রমশ চলেছি –
ধীরে আরো ধীরে ।

সেখানে আকাশ নেই , সেখানে বাতাস নেই
নেই গন্ধ, নেই শব্দ, নেই সুর, তাল ,
শুধু অন্ধকার ।
একদিন মিশে যাব তার সে গভীরে
কান পেতে শুনি আমি পদশব্দ তার ।