Saturday, December 31, 2011

আমি কার


যে তীব্র আকর্ষণে,
তীক্ষ্ণ যন্ত্রণায়
এতকাল বেঁধেছ আমায় ,
সে কোথায় !
কোথায় সে গেছে হারিয়ে !
তুমি আমি আজো দাঁড়িয়ে ।
মাথায় আকাশ ।
শিকড় ধরেছে মাটি
ডাল-পালা গেছে ছড়িয়ে ।
তবু কেন সে বাঁধন
গেছে হারিয়ে !

যন্ত্রণা আজো পাকে পাকে
সাপের মতন
মোহময় আকর্ষণে  ডাকে-
অজানা ভাষায় ।
অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে
উঠে আসে ধ্বনি ,
আমি একা কান পেতে শুনি ,
দেশ-কাল পার করে ওঠে সীৎকার ,
আমি কার! আমি কার !
চেয়ে দেখ সে বাঁধন যায়নি হারিয়ে ,
সৃষ্টির আদিতে ডেকেছি যে-
আমি আছি তোমার ভিতর।

Wednesday, December 28, 2011

শেষের আকাশ




আমি আসি আমি যাই,
আমি থাকি কিছুক্ষণ,
জীবন- তুমি আসা যাওয়ার
মাঝখানে, কমা বা সেমিকোলন;
পূর্ণচ্ছেদ নও

না ডাকলেও আসে সে,
শোনেনা বারণ
নিয়ে যায় সাথে যাকে মন চায়,
মরণ সে, এখন তখন ,
চাও নাই চাও ।।

ফুল ফোটে ঝরে যায় ,
তার ছোট্ট জীবন ;
তবু দেখো খুশী খুশী হাসে
জীবন মরণ দেখি আমার বাগানে
রোজ আসে  যায়
সেখানে আমার এই মন যে হারায়

ছোট ছোট বেলা ভাগ করে,
সকালের   ফুল আমি
যত্নে ভরে রাখি ,
আমার মনের খাতায়
রূপ, রস , গন্ধ সব থাকে ,
যেমনটি ছিল তারা সব একে একে
উঁকি মেরে যায়
শেষের বেলায় , মরণ কে দিয়ে ফাঁকি
নতুন আকাশ ঘিরে  তারার মালায় ।।


Saturday, December 17, 2011

সরে গেছে ছায়া




তুমি বুঝি আজকাল
মাঝ-আকাশে থাকো !
ছায়াটাকে আর দেখি না তো ।

খুশি খুশি আলো আলো
হাসি দেখি নয়নতারায় ,
রাতগুল শুধু যেন জ্যোৎস্না ছড়ায় ।

ভয়াল, করাল ছায়া
থাক পরে মাটিতেই থাক ।
আমাকে পারেনা ছুঁতে তার নিশি ডাক ।

তোমাকে দেখি যে আমি
সবুজের ফাঁকে ফাঁকে ,
ফুলের রেণুতে আর পাখিদের ডাকে ।

সামনে রয়েছ তুমি
জীবনের আলো ;
পিছনে থাকুক পরে অন্ধকার কালো ।

রাত যায় দিন আসে ,
দিন শেষে রাত ;
অন্ধ আবেশে আমি বাড়িয়েছি হাত ।

স্নেহের পরশমণি
দিয়ে গেলে হাতে ,
হৃদয় ধন্য হল নতুন প্রভাতে ।

যত কাল আছি আমি ,
তুমি আছ সাথে –
স্নেহের পরশমণি দিয়ে গেলে হাতে ।।



Thursday, December 15, 2011

ছায়া


ছায়া

তার তীব্র দৃষ্টি আমার অন্তরের অন্তঃস্থলে
শীতল প্রস্তর রেখে গেল
তার ভার বয়ে বয়ে ফিরি

জনতার ভীরে দেখি তার জ্বালাময়ী চোখ-
যেন ডেকে বলতে চায় শেষ হোক শেষ হোক

শেষের সুরু তো সেই জন্মের প্রথম লগনে
শুরু হয়ে ছিল শৈশবে পড়েনি মনে,
যৌবনও চলে গেল ।।

কি তীব্র আকর্ষণ, নির্মম নিষ্ঠুর ঠেলে ফেলা
এখনি এসোনা কাছে, এখনো রয়েছে বেলা

আমার দুচোখ দেখে আমারই আয়না
চেয়ে আছে নির্নিমেষ, চোখ ফেরাতে চায়না।।

তার কালো মসলিন চোখে ,
ঝকে ঝকে তারা ,
আমায় করেছে দিশা হারা ।।

একা হলে আসেনা কাছে দূর থেকে দেখে
বিদ্রূপ ভরা চোখ হাসি ঢেকে রাখে ।।

কে গো তুমি রাত্রিবাসী মায়াময়ী ছায়া ,
আমার স্বপ্ন নিলে কেড়ে ,
যেতে যদি হয় ছেড়ে
আমার জীবন-
এস কাছে বেঁধে ফেল
আগুনের সাত ফেরে ।।

Monday, December 12, 2011

যারা চলে গেল




নিথর শরীর একে একে ঢুকে যায়
লাশকাটা ঘরে
মুনাফা-লোভীর বিষাক্ত কালো জিভ
কুণ্ডলী পাকিয়ে  ঘুরে ঘুরে
শ্বাসরোধ করেছে এদের

অসহায়, অসুস্থ মানুষ এরা ছিল
খাটে শোয়া মৃত্যুর কবলে ছটফটিয়ে
ডেকেছিল রক্ষা কর, ডাক্তার, নার্স
সে সব আর্তনাদ বুকের ভিতর থেকে গেল
পায়নি খুঁজে গলা আহা কত যন্ত্রণায়,
সবার অলক্ষ্যে চলে গেল এরা

হাসপাতাল সেবা-প্রতিষ্ঠান মুমূর্ষু
রোগীর কাছে ডাক্তার যেন ভগবান
এই তার রূপ হাসপাতাল তো নয়
যেন অন্ধকূপ ঢলে পড়ল অকালে
মৃত্যুর কোলে, মা , ভাই, পরিবার
পরিজন , কার পাপে

টেনে এনে ফেল রাস্তায়, মুনাফা-লোভীর দল
এদের কাছে মানুষের প্রাণ
বিক্রি হয়ে যায় নিরাময় হবার আশায়
  আসে যারা- এরা বেঁধে ফেলে
লোভের নাগপাশে, ছেড়ে দেয় জরাজীর্ণ
তাতেও মেটেনি খিদে, আরও আরও আরও
লাভ চাই
জতুগৃহ তৈরি করে ছেড়েছে বাজারে
মরছে, পুড়ছে কত রোগী
নিশ্চিন্ত, বেখেয়ালে 
এরা সিন্দুকে টাকা ভরে

Wednesday, December 7, 2011

সুরঞ্জনা




তার চোখে কোন ব্যাথা,
তার মনে কি যে কথা ,
জেনে কি হবে গো তোমার ।
দিন আসবে , দিন যাবে ,
সংসার গভীর হবে ,
মনে কি রাখবে সেতার -
কার হাতে বাজে সুরে ,
কার মন-প্রাণ জুরে
শুধু স্বপ্ন, শুধু মায়াজাল ,
স্বপ্নরা পাখা মেলে প্রজাপতি প্রায় ,
মায়াজালে বাঁধা পরে ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায় ।
এখানে কুঞ্জবনে গাছের ছায়ায় ,
দুজনার বাসা নেই,
প্রেম-ভালবাসা নেই,
আছে স্বপ্ন, আছে গান, সুর আর তাল ।
সে তার একার -
ছোটো বড় ব্যাথা যত ভাসিয়েছে জলে ,
মনের মণিকোঠা ডুবেছে অতলে ।
নেই কষ্ট আর ।
তার হাত বাজে সুরে,
তার মন প্রাণ জুরে ,
শুধু স্বপ্ন, শুধু মায়াজাল ।
কেন মিছে ডাক তাকে ,
ফিরবে না কারো ডাকে
সুরঞ্জনা সুরেতে মাতাল ।।



Sunday, December 4, 2011

আমি ফিরে চাই


আমি ফিরে যাই ,
তুমি ও থাকবেনা দাঁড়িয়ে
মাঝ খানে শূন্য হাহাকার ,
এক বুক দীর্ঘশ্বাস ,
কত কিছু গেল হারিয়ে

সময় চলে যাবে তার মত ,
আজকের ভাঙ্গা-হাটে ,
কাল নতুন বাজার
আজ তোমার দৃষ্টিতে
স্নান করে ,
বৃষ্টি পরেছে হাজার ,
যার বুকে ;
কাল সেকি ভিন্ন দুটি
চোখের ছায়ায় ,
থাকতে পারবে সুখে !

আমি ফিরে চাই
যে পথে বিষণ্ণতা ছেয়ে আছে
মেঘের মতন
সে পথ কবির লেখা শেষের কবিতা ,
সেখানে প্রেমের হয় শুরু ,
দিন শেষ হয়ে গেলে আকাশে
মেঘের দল  বেদনায় বাজে গুরু গুরু

এ পথের শুরু কই, শেষ কোন-খানে ,
কেউ কি তা জানে !
তবু  মাঝে-মধ্যে ফিরে আসি
এপথে ছড়ান আছে হাসি ,
এ পথে হৃদয়ের যৌবন ধরা পরে
হৃদয় মাতাল হলে , সে মদিরা হাতে,
ফিরে যাই ঘরে ।।


Wednesday, November 30, 2011

তুমি এলে




তুমি আসবে তাই-
প্রস্তুত করেছি মাটি,
রোদে, জলে, পাহাড়ে, জঙ্গলে ।
তুমি আসবে বলে –
আকাশ-মাটিকে এক করে
যুদ্ধে সেজেছি ;
নরম, লাজুক হাতে অস্ত্র ধরেছি ;
ভুলেছি সংসার ।
ভুলেও দেখিনি ফিরে –
মরে কত চেনা-জন, করে হাহাকার ।
শুধুই গুনেছি ক্ষণ –
ঐ আসে ঐ বুঝি ঝড়ের মতন ,
উড়িয়ে পথের কাঁটা-
ভীষণ ভৈরব ।
প্লাবনের মত অনিবার্যতায় ।
সেই তুমি এলে –জঙ্গল থেকে দূরে
নীরবে নিভৃতে, এলে মৃদু পায় ।
আমার যত আড়ম্বর মিছে করে
রাত ভোরে ফিরে গেলে
কোন অস্তাচলে –মাটি আজ আকাশ কে চায়  ।
আকাশে ,বাতাসে, পাহাড়ে, জঙ্গলে ,
তোমার পরশ রেখে গেলে ।
তবু কেন যুদ্ধসাজ,
তবু কেন রক্তপাত,
তবু কেন রাজনীতি,
চেনেনা তোমায় ।

Monday, November 28, 2011

আমি বিপ্লবী গান গাই




তোমরা মর আমরা কিছু করে খাই ;
লালমাটি, জংগল , পাহাড় ,
দেশ-দেশান্তরে তোমাদের মত
কিছু অবোধ মানুষ মরে ;
আমাদের স্বার্থে তোমাদের হাতিয়ার ধরাই ;
আদর্শের বুলি কপচাই,
পেটে কিল মেরে তোমরা অস্ত্র ধর ,
না বুঝে মানুষ মার ;
তোমাদের পিছনে আমরা দাঁড়াই
কিছু করে খাই
আমরা তোমাদের দেবনা অন্ন ,
দেবনা বস্ত্র , দেবনা শান্তি ,
যদি কেউ কিছু দিতে চায় ,
আমরা তাদের ডরাই
দারিদ্রের থেকে মুক্তি যদি পাও ,
যদি শান্তি পেতে  চাও ,
যদি সমাজের মাঝে স্থান করে নাও
আমরা কোথায় যাই
না হে না, তোমরা এসনা এখানে ,
মার আর মর - থাক মৃত্যু আসে যেখানে
হিংসার মন্ত্রে উজ্জীবিত প্রাণ
সমাজকে শত্রু জেনে কর দান
আমি কিছু করে খাই
তাই তো কলম হাতে আসি ছুটে ,
তোমার মৃত্যুতে গান গাই
আমি কিছু করে খাই ।।

Monday, November 21, 2011

পারিনা মুক্তি খঁজে নিতে




আমি তাকিয়ে ছিলাম,
সাদা দেয়ালের মতন তোমার মন থেকে,
ফিরে আসা আমার ব্যথাগুলো
কেমন কুঁকড়ে যাচ্ছে
সেটা কি শুধু
কষ্ট নাকি অনুতাপে, ধিক্কারে
অপমানে
প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ নয়,
আমি  শিশু যেন এক অবোধ
মানসিকতায় , আঁকড়ে ধরতে
চাই  না-পাওয়া স্বপ্নকে

ফিরে ফিরে দেখছিলাম
উদাসীনতা কি চরম শান্তি এনে
মুক্ত করেছে তোমায়
কেন আমি নয়, কেন আমি
পারিনা মুক্তি খুঁজে নিতে
অন্ধকার মনের আনাচে কানাচে
এখনো লুকিয়ে বাস করে -
মুগ্ধ সে তোমার আশায়,
তার হাতে-পায়ে জরিয়ে ধরতে
চায়- শ্বাসরোধী অনুভূতি ;
আমি বুঝি, খুব বুঝি,
তবু পারিনা  মুক্তি খুঁজে নিতে

আমি ডেকেছি তো নাম ধরে,
ধাক্কা খেয়ে তোমার দেয়ালে
সে আসেনি  ফিরে
সে ডাক পাখনা মেলে উড়ে গেছে
অসীম নির্বিকল্পে অনন্ত জিজ্ঞাসায় ;
আমি তবু প্রজাপতি হয়ে
বসে আছি মাধবীলতায়


Friday, November 11, 2011

ফরিয়াদি গান




কার মিষ্টি কথার ঝাঁঝ
কার চোখের জলের আঁচ,
মন ফেরারী করল । ।
ঢেলে ভালবাসায় জল ,
বুনে  মিথ্যা কথার জাল ,
মন গরলে ভরল ।

তোমার ফরিয়াদি গান
বন্ধু বিঁধবে না তার প্রাণ -
মন তার আকাশ হল আজ ;
সেতারে কত না ঝঙ্কার ,
তবুও সে ফিরবে না তো আর,
মনে তার ভ্রমর করে রাজ

সে ভ্রমর পদ্ম-ঝিলের ধারে ,
সে ভ্রমর মানস সরবরে
সে এক দিব্য নেশায় চুর
তাকে ডেকনা আর গানে ;
তীর বিঁধবে না তার প্রাণে
সে দেশ  মাটির থেকে দূর
অনেক দূর

Monday, November 7, 2011

আমি তোমার কন্যা সন্তান




সভ্যতা আমাকে ব্রাত্য করেছে কেন
কেন মা তুমি হয়েছ বিমুখ-
বিমাতার মত
আমিও যে থাকতে চাই সদা দুধে ভাতে
আমার ও মাথায় নামুক
তোমার অভয়াশিস ,
শত শত
কোন এক শুভ ক্ষণে
ভ্রূণ হয়ে প্রাণ পেয়ে ধন্য মেনেছি
ভিতরে ভিতর মাগো তোমাকে জেনেছি
তোমার নিশ্বাস বুকে নিয়ে
তিল তিল গড়ে ওঠা প্রাণ-
মাগো আমিও যে তোমার সন্তান
তবে কেন আমাকে ঠেলতে চাও দূরে
শিকড় উপড়িয়ে ,
সন্তানের সুখ কেন আমি পারব না দিতে
আমিও তো তোমারি মতন এক মেয়ে
মাগো দয়া করো , ফিরে দাও প্রাণ-
আমিও যে তোমার সন্তান ।।

Sunday, November 6, 2011

বেঁচে থাকতে চাই


সামনে বৈদ্যুতিক চুল্লি
ভিতরে পুড়ছে দেহ
প্রতিদিন, মুহূর্তে মুহূর্তে
শূন্য বুকে, দুঃখ চোখে
আমি
ও আমরা আছি অপেক্ষায়
কতদিন আরো কতদিন
জীবনকে পাবো ;
এই ভাবনায় ,
সুখের আশায় জল ঢেলে
দুঃস্বপ্নের রাত্রি যাপন
এর নাম জীবন তো নয় ,
জীবন্ত নরক দর্শন
কেন তবে জীবনের দুঃখ ছেঁকে
সুখটুকে চোখে এঁকে
রূপ-রস-গন্ধ তার করিনা গ্রহণ
যতক্ষণ আছে এ জীবন !

তুমি আছ আশায় আশায়
তোমার দেহটা গেলে
কিছু তবু থাকে বাকি
কারো বুকে, কারো চোখে
বেদনার লাল রক্তে ,
আমৃত্যু ভালবাসায়
ভুল বন্ধু , ভুল ,
থাকে শুধু তোমার অভাব,
তুমি নয় ।।

দূরে যে জ্বলছে চিতা,
সে আগুনে একটু একটু করে
পুড়ছ তুমিও ,
আগুনের শেষে শুধু পরে থাকবে ছাই
যতদিন আছে এ জীবন-
সব সুখ নিংড়ে নিয়ে,
বেঁচে থাকতে চাই ।।

Thursday, November 3, 2011

আশা


জোনাক জ্বলা রাতের মতন
অন্ধকারে তোমার দুটো চোখ
স্বপ্ন কে দেয় ডাক ;
জোনাক জ্বলা রাতের মতন
অন্ধকারে তোমার দুটো চোখ
স্বপ্ন কে দেয় ডাক ;
আশা
তোমার ভালবাসা,
থাক না তলানিতে ,
তবুও জানি দেব না তো মিলিয়ে যেতে
মরীচিকার মতন
 মনের ভিতর গুরু গুরু ,
বুকের ভিতর দুরু দুরু
আশায় নিরাশায় -
জীবন স্বপ্ন দেখে যায়
পরিযায়ী পাখির মতন
আসতে থাকে তারা
সুখের স্বপ্ন যারা ,
মনের জলাশয়
ভুস ভুসিয়ে উঠে আস তুমি ,
আশা ,
জীবন স্বপ্ন দেখে যায়



তোমার ভালবাসা,
থাক না তলানিতে ,
তবুও জানি দেব না তো মিলিয়ে যেতে
মরীচিকার মতন
 মনের ভিতর গুরু গুরু ,
বুকের ভিতর দুরু দুরু
আশায় নিরাশায় -
জীবন স্বপ্ন দেখে যায়
পরিযায়ী পাখির মতন
আসতে থাকে তারা
সুখের স্বপ্ন যারা ,
মনের জলাশয়
ভুস ভুসিয়ে উঠে আস তুমি ,
আশা ,
জীবন স্বপ্ন দেখে যায়


Sunday, October 16, 2011

পাখি ও অষুধ


রাত জাগা দুটি পাখি

সকালে উঠেই দেখি
রাত জাগা দুটি পাখি কথা বলে ছিল ;
তাতে কি বা এল গেল !!
যায়নি হয়ত কিছু, আসেনিও কিছু ।
তবু দেখ দুলাইনে গান হয়ে গেল ।
গান তো গেয়েছে পাখি, তোমার কি লাভ !
ছি ছি , বলেনা অমন করে বলাটাও পাপ ।
আমি যে কবিতা আমি অনুভবে চলি ,
যে কথা বলেনা পাখি সে কথাটা বলি ।
পাখি থাকে কবিতার ডানায় ডানায় ,
অনুভুতি ভরা মন কানায় কানায় ।
এদিকে সেদিকে মারে উঁকি
কোথাও ভাবের কোনো সুযোগ আছে কি !
সকালে পাখির ডাক, দোলা দেয় মনে
কবিতা ছোট্ট করে লেখে সে গোপনে ।।
           
অষুধ

অষুধ কিসে লাগল তোমার,
অ-সুখ ছিল বুঝি ;
তাই তো আমি এখানে সেখানে
পদ্য লেখা খুঁজি ।
লেখনী নাও হাতে, যদি দুঃখ পাও খুব,
যদিও আমি দুখ-সাগরে
দিয়েছি অনেক ডুব ।
সুখের দিনে যা পাও ভাল
তবু,
 জানবে মনে মনে ।
দুঃখ যত আঘাত করে, ততই আলো আনে ।।


Friday, September 23, 2011

নাম মাহাত্ম


একটা নাম-
গড়েছে একটা জগত
নামে কি থাকে প্রাণ!
যে শোনে সেই হাসে ।
নামের দাম,
যে জানে সেই জানে।
পাগলপারা যে জন ভালবাসে ।

চোখেতে তার জগত করে বাসা,
ভাবের ঘরে ঠাসা ,
তাকায় না সে ফিরে ।
পাখির মতন নাচে সে শুধু
নামটি ঘিরে ঘিরে ।।

নামের স্রোতে ভাসে-
নামের সাথে গন্ধ আসে,
স্বপ্ন চোখে ভাসে ।

নাম যে আর নামটি শুধু নয়;
নাম যে তার জগতটাকে
করেছে মধুময় ।।

সুন্দরী এক গাছের নাম




কাল এসেছিল ঝড় এই বনে
ভীষণ তান্ডব করে গেছে তারা ,
দেখ কত ভাঙ্গা ডাল পরে আছে,
পরে আছে পাখির ছানারা মুখ থুবরিয়া ।
বড় বড় গাছ সব
কাত হয়ে আছে এক পাশে ,
শিকড় নিয়েছে উপড়িয়ে-
পাগল বাতাসে ।।

একটা একলা গাছ সুন্দরী,
আছে সোজা মাথা উঁচু করে-
যেন পোড়া কাঠ- পাতাহীন ।
মনে হয় বাজ পড়েছিল কাল রাতে,
সুন্দরী গাছ নয় আর,
ওটা প্রাণহীন ।।

ঐ গাছে পাতার আড়ালে,
বাসা করেছিল জোরা পাখি।
বুকে তার ছিল আশা,
ছিল ডাকাডাকি-
পিয়া পিয়া পিয়া ।।
আসছে না সাথী কেন ফিরে ,
পাখির কান্না তাকে ঘিরে ।।
গাছটার গেছে যাক প্রাণ
প্রকৃতির স্নেহ রূপে বাজ ,
নিভিয়ে দিয়েছে ছোট হিয়া ;
এই বনে ঐ গাছে
ডাকবেনা আর কোনও পাখি
পিয়া পিয়া পিয়া ।।

Thursday, September 22, 2011

প্রেমের জ্বর




ঝরনা ছোটে ঝরনা চলে
পাথর বেয়ে যায়,
মন পাথারে প্রেম বয়ে যায়
প্রেমের পরীক্ষায় ।
ডাইনে বামে দাঁড়িয়ে হতাশ
দাঁড়িয়ে প্রেমিক কুল,

জোর করে তাই প্রেম সাগরে
মন হারালে কুল ।
কাউকে ছোঁয়া আধেক দেওয়া,
কাউকে দেওয়া পুরো ।
প্রেম আগুনে মন পুড়েছে
এবারে তুই জুরো ।

সে আসে ,
সে যায়,
সে থাকে কিছুক্ষণ ,
তারপরে যায় পাথর বেয়ে,
মাড়িয়ে শরীর মন ।

ঝরনা ছোটে ঝরনা চলে
পাথর বেয়ে যায়,
প্রেমের জোয়ার শরীর ছুঁয়ে,
মন ছাড়িয়ে যায় ।

মনের কোনায় ঘুমায় প্রেমিক,
প্রেমিক , প্রেমের জ্বর ;
প্রেম চাস তো শরীর ছেড়ে ,
হৃদয় খুলে ধর ।।

কবির স্বপ্ন পুরাণ




তুমি আসনি কাছে, আসনি কাছে
আসনি কোনোদিন
আমি শরীর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে

চেয়েছি প্রতিদিন

কলম কেউ টেনে ধরে,
গলাটা ধরে চেপে ;
বুকের মাঝে
নানা রকম শব্দ ওঠে কেঁপে

তারা চাপাই থেকে যায়-
ভাষা শুধু বলে আমায় ,
হায়রে বন্ধু হায়
অণু আর প্রেরণা তোর
জোরা তো লাগেনা
নতুন কোনও ভাবনা-ঠিকানা
পাওয়া  গেলনা  আর
মনের আকাশ শুধুই হল ভার

মনের আকাশ-বাতাস ভারি হল
ঝড় হলো না-বৃষ্টি উড়ে গেল
এলো মেলো শব্দ-বাতাস
মনেই গেল মিশে
কবি হবার আশা যত
স্বপ্নে গেল ভেসে ।।