Sunday, July 31, 2011

আমার এ ব্লগে প্রথম দিকে আমি একটি কবিতা বা ছড়া লিখেছিলাম 'পন্ডিত দূরে থাকো" - বলা বাহুল্য যে কেউ বাংলা শিশু কবিতা বা ছড়া লিখবে সে সুকুমার রায় বা রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর দ্বারা অনুপ্রাণিত হবেই । আমিও হয়েছি আর কবিতাটি এ প্রকার-



পন্ডিত ডেকে বলে কি লিখেছ কবিতা
সেখালাম এত কিছু ভুলে গে লে সবই তা !
এখানে কমা , সেখানে দাঁডি
এবারে সেমিকোলন দাও
তোমাকে ক্ষমা কি করে করি ,
আমাকে জিনি ভোলেন যাও,
তার নাকেতে তাড়াতাড়ি মস্ত বড় দড়ি দাও
অর্থহীন শব্দ কথা, শব্দহীন অর্থ যত ,
এক হাঁড়িতে ঢাকনা দিয়ে
পাকাও কেন ইচ্ছা মত ?
মন বলে আমি অত ব্যাকরন মানিনা,
শব্দের মাঝখানে দাঁড়ি কমা টানিনা
পন্ডিত হতে আমি চাইনিতো কোনোদিন,
আমার এই মাথা জুরে শব্দের বিন্ বিন্
সেই সব শব্দকে টেনে এনে বাইরে ,
ছন্দের খাপে পুরে ভারি মজা পাইরে
ছন্দের ঘারে চেপে অর্থও আসবে
বের হবে বাহিরেতে যত ঝেড়ে কাশবে
শব্দই হাসে কাঁদে , শব্দই গান গায়,
শব্দের তালে তালে এ মনটা ভরে যায় ।
আনন্দে থাকা চাই একটাই এ জীবন-
পন্ডিত দূরে থাক সাথে নিয়ে ব্যাকরণ।।
[
ছড়াটা অনেকদিন আগে লিখেছিলাম, আমার ব্লগে- আজ হঠাত ওয়াশিংটন বাংলা রেডিও /Washington Bangla Radio ব্লগে ' আলকা সান্যালের লেখাটা দেখে আমার লেখক/কবি বন্ধুদের সংগে লেখাটা শেয়ার করতে ইচ্ছে হল ]
পণ্ডিত দূরে থাক- অলকা সান্যাল
পণ্ডিত দূরে থাক সাথে নিয়ে ব্যাকরণ
এ যেন কে খুলে নিল ভাষাটার আবরণ
শব্দরা কেঁদে মরে, ছন্দরা অসহায়
একটু যত্ন পেলে হেসে হেসে দোল খায়।
ভুলে গেলে চলবে না ভাষাটা যে মাতৃ
যে দেশেই থাকি নাকো আমাদের ধাত্রী।





আমার দৃঢ় বিশ্বাস তিনি আমার লেখার ভিতরের মানে/spirit বোঝেন নি। আমার জানতে ইচ্ছা করে তিনি সুকুরমার রায়ের আবোল তাবোল, খাই খাই, হ য ব র ল পড়েছেন কিনা । পড়ে থাকিলে তাঁর "হাসছিল সজারু, ব্যাকরণ মানিনা" ইত্যাদি লেখার কি মন্তব্য করেছেন ।

Saturday, July 30, 2011

একালের রাধা-আয়ান সংবাদ

রাধা
ভণ্ডামিটা ঘোমটা মাথায় বসে আছে অন্তরে
বাইরে তবু লজ্জাবতী কুলবধুর ভেক ধরে
ঠকাতে চাই জগত কে ।
ঘরের মানুষ দোষ করেনি মন্দ আমার অন্তরে
পরপুরুষে মন মজেছে সাপ নাচুনী মন্তরে
নাচাতে চাই মহৎ কে ।

আয়ান
নিজের উপর দোষ নিয়ে সব বলছ কেন
যাচ্ছে তাই ; যা করেছ ঠিক করেছ
আমি তো আর পুরুষ নই;
মদের নেশায় বুঁদ হয় রোজ রাত্রে
ফিরে ভোর ঘেঁসে ।
ন্যাতার মতন কেতরে থাকি
বিছানাটার একপাশে ।

সত্যি কথা বলতে গেলে আমার ও
এই শরীরটা
সেঁকে আসি গরম তাপে-
লক্ষ্মী, চাঁপা, নন্দিতা ,
নানা রকম নাম যে তাদের হরেক রকম
ঢং জানে ।
কিন্তু আমার মন মজেনা সে সব ফুলের অঙ্গনে ।
আমার যে এক তুমিই আছ মনটা জুরে সুন্দরী ।
যে চুলতেই যাই না কেন, আসব ফিরে রাত ভোরে ।।

Friday, July 29, 2011

ভালবাসার বয়স

এমন কোনও আইন আছে নাকি
বয়স হোল যার
ভালবাসার নেই কোনও দরকার !
ভালবাসার মানে শুধু,
ফুল ফোটান বুকে ,
বসন্ত বেলায় ,
শীতের জরা ছড়িয়েছে যার বুকে
এই অবেলায় তবু যার মনে
প্রেম রয়েছে বাকি,
ভালবাসায় তার –
নেই কি অধিকার ?

যৌবনে তার কাছে আসায় –
যে মাদক ছড়াত শীরায় ,
আজো আধো ঘুমের ঘোরে ।
আজো যে তন্দ্রায় ,
শীরায় শীরায় আগুন জ্বালে ,
বুকের মাঝে অবুঝ ব্যথা
ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ।

জেগে উঠে বসলে পরে ধমকে ওঠে মন –
ছিঃ এমন তর ধরণ -
দেখে লোকে বলবে কি ?
আর তোমার বয়স আছে নাকি ?

কে বলেছে নেই ! যত দিন জীবন আছে,
আছে সবুজ মন ।
ভালবাসায় অধিকার আছে ততক্ষণ ।

এখন শুধু চোখের দেখায় হৃদয় নাড়া দেয় ,
এখন শুধু আলো-ছায়ায় শরীর ছুঁয়ে যায় ,
কার পরশ মনের মনি কোঠায়
জ্বালিয়ে রাখে আলো ।
রক্তমাংসে গড়া আমি বুঝতে পারি না যে
শরীর ছাড়া কেমন করে বাসব তাকে ভালো ।
মন ছুঁয়ে সে শরীর জাগায় ,
তবুও কেন বল ,
আর নয় আর নয়,
অনেক বয়স হোল ।।

Tuesday, July 26, 2011

শূন্য

আকাশের অসীমে নাকি কালের অন্তহীনে
কোথায় দাঁড়িয়ে আছি –
দেখেছি স্ব-চোখে আমায় ,
নাকি সে তোমারই ছায়া ,
ফিরে আসে হাজার আলোকবর্ষ পরে !
দেহের ভিতর প্রাণ
চলে নিরন্তর
সেকি শুধু শেষ হতে মৃত্যুর ঘরে !

অসীম অনন্ত স্রোতে কারা যায়, আসে কারা
কোন উৎস ঘিরে , প্রাণের আবর্তন,
একটাই লক্ষ নাকি সেখানেও আছে
দুই , সত্যের ও বিভাজন !

আমি কি আমার কল্পনা ,
সত্য কিছু নই,
তোমার আলোয় জন্ম
মৃত্যু ছায়ায় ,
ক্ষণিকের পরিচয়,
অসীম অনন্ত দেশ-কালে ,
কোনদিন কোন ক্ষনে কিছুই যদি না থাকে ,
সবই তো শূন্য শূন্য
শূন্য মনে হয় ...

Wednesday, July 20, 2011

২১ জুলাই চল ব্রিগেড যাই

লালবাড়ির মোড়ে
গুলি চালাল পুলিশ ,
মানুষ লক্ষ করে ।

সেদিন একুশে জুলাই
লুটিয়ে পড়ল পথে ,
তেরটি তাজা প্রাণ ।
সরকারের চোখে তারা
নেহাতই জঞ্জাল ,
প্রতিপক্ষের জান ।

উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার
বলেন মন্ত্রী রেগে ,
জানেনা এরা---?
লালবাড়ি দখলে আছে কার?

এখানে সমাবেশ !
প্রতিবাদী মিছিল !
ছত্রভঙ্গ কর এদের ,
গর্জে ওঠে ব্যভিচারী
বাম ফ্রন্ট সরকার ।
সেদিন মিছিলে সামনে যে ছিল
একাকী বাঙালী নারী
শপথ নিয়েছে ভুলবনা
আমি এরা যে অত্যাচারী ।

১৯৯৩ এর একুশে জুলাই
নেত্রী ছিলেন আজকের
বাঘিনী মমতাই ।

প্রতিটি বছর এই দিনে
আমরা শহিদ স্মরণে যাই ।
আজ তার সাথে পালন করব
বামেদের অপশাসন সরিয়ে
তৃণমূলের জয়

Tuesday, July 12, 2011

সমর্পণ

রাত তখন অনেক হবে, ঠিক মনে নেই কটা,
আকাশ জুড়ে কালো কালো ঘন মেঘের ঘটা ,
বসে ছিলাম বালির উপর, সামনে সমুদ্দুর ,
মেঘের ডাক আর ঢেউয়ের শব্দ বাজছে গুরুর গুর ।

দূরের থেকে আসছে তেড়ে পাগলা ঢেউয়ের দল,
আছড়ে পরে বালির উপর উচ্ছল চঞ্চল ,
কোথাও আলো যায়না দেখা, বসে ছিলাম আমি একা,
বুকের মধ্যে তোমার প্রেমের ছিল যে সম্বল ।

তুমি যদি এমন রাতে থাকতে পাশে আজ,
ঝড়ের সাথে উড়িয়ে দিতাম আমার যত লাজ,
যে কথাটা হয়নি বলা মনের মতন করে ,
সেই কথাটা শুনতে পেতে আকাশ বাতাস জুরে ।

ঢেউ যেমন আছড়ে পরে দুরন্ত দুর্দম,
তেমনটি ঠিক হয়না কেন আমার সমর্পণ ।
জলের শেষতো যায়না দেখা, নেই যেন তার সীমারেখা,
আমার সাথে তোমার মিলন অনেক খানি কম ,
এমনটি ঠিক হয়না কেন আমার সমর্পণ ।

হাওয়ার সাথে আসছে ভেসে জলের সুবাস ঐ ,
জল ছাড়া আর নেই কিছু আজ জল শুধু থৈ থৈ ।
আমার প্রেমের সাগর কেন এমন গভীর নয় ।
সমাজ তাকে রাখে বেঁধে এমনি মনে হয় ,

থাকতে যদি আমার পাশে এমন রাতে আজ ,
সাগর জলে ভাসিয়ে দিতাম আমার যত লাজ ।
আকাশ জুড়ে মেঘের ঘটা সাগর জুড়ে ঢেউ ,
আমার বুকে কে লুকাল জানল না তা কেউ ।
কাল নাগিনী ফুঁসছে যেন মেঘ করে গম গম ,
এমন রাতেই হোক আমার পূর্ণ সমর্পণ ।

Monday, July 11, 2011

ত্রিনয়নী



কপালে তোর কি আছে মা
বল মা তারা বল ;
সে কি চাঁদ, তারা না ত্রিশূল,
নাকি প্রদীপের শিখা ঝল মল
বল মা তারা বল ।

গৌরি মাগো কালী হয়ে
জগত নাচাও পায়ে ।
শরম ভুলে বসন খুলে
কেন এলে আদুর গায়ে
জগত নাচাও পায়ে ।

আমার দিন রাত তোর চোখের তারায়
মাগো নিলে চুরি করে ,
তোকে ছাড়বনা আর
ছাড়বনা মা ।
রাখব বুকে ধরে ।

আমার দিনে কালী রাতে কালী
আমার জগত কালী হল ।
মা তোর কপালে কি রাখিস ধরে
বল মা গো বল ।

চণ্ডী তোমার চোখে আগুন মুখে আগুন,
আগুনে নাচ তা তা থৈ ;
চোখ নামিয়ে দেখ মা পায়ে শিব শুয়েছে ঐ ।
মা তোর শরম গেল কৈ !

মাগো বসন পর অস্ত্র ছাড়
চোখের আগুন ঢাকো জলে ,
আমার পাগলি মেয়ে দেখ মা চেয়ে ,
ভোলানাথ পরে তোর রাঙা চরণ তলে ।

অঞ্জলি




একবার তোর অন্ধ মেয়ের চোখে মা তুই দৃষ্টি দে,
একবার তোর স্নেহের ছোঁয়ার
আকুল হৃদয় ভরিয়ে দে।
একবার তোর অভয় হাসি
দেখা মা তুই জগতকে ;
মাগো মা তোর প্রেমের সুধায়
হৃদয় পাত্র ভরিয়ে দে ।
যাক ঘুচে সব ভয় অপমান
সংশয় আজ যাক দূরে ।
শক্তিময়ী তোর চরণে
একবার দে ঠাই করে ।
তোর রাঙ্গাজবা চরণে মা
পাপ দেব সব অঞ্জলি
পাপের রক্তে তোমার পায়ে
চড়াব মা আজ বলি ।
পাপশূন্য হৃদয়ে মোর
নতুন আসন পাতবরে
শক্তিময়ী তোর চরণে
এইবারে দে ঠাঁই মোরে ।

Sunday, July 10, 2011

জিজ্ঞাসা

অনন্ত জিজ্ঞাসা নিয়ে, অসীম বিস্ময়ে
আমার অন্তর চেয়ে থাকে
আমার বাইরে চিরদিন ।

তবু তার হয়না তো জানা -
আছে নাকি শেষ চাওয়া-পাওয়া ।
হয় নাকি মিলন সাধন
যেমন রাতের কোলে শেষ হয় দিন ।

পৃথিবীর মাটি চায়
আকাশকে নিতে কাছে টেনে ,
সুদূর দিগন্তে চেয়ে থাকে
অতৃপ্ত নয়নে ;

জানে মনে কোনোদিন তাকে
হবে না তো পাওয়া ।
সান্ত্বনা তার শুধু দূর থেকে
মিলনের রেশ টুকু ,
নিজের চোখেতে দেখা
মরীচিকাসম
আকাশ-মাটিতে মিশে যাওয়া ।

Saturday, July 9, 2011

আগমনী

মাগো আমি মরি ডেকে ডেকে
তোমায় খুঁজি তোমার মাঝে থেকে থেকে ।
তুমি দাও না তবু সাড়া ,
তুমি চাও কি চাও কি গো মা
দেখতে আমায় তোমার মতন পাগলপারা ।
মায়ের স্নেহ পাইনা খুঁজে তোমার চোখে ,
ব্যথা বাজে করুণ সুরে আমার বুকে
চরণ তোমার লুকিয়ে কোথায় রাখলে মাগো ।
বৃথা হল আমার চোখের অশ্রুধারা ।

মাগো তোমার যে রূপ ছিল আমার মনে ।
খুঁজি তারে মনে মনে ।
ঠাকুর ঘরে যাইনা বলে
সবাই যে গো বলে আমায় লক্ষ্মীছাড়া ।

মাগো তোমার একটি নামের মালা জপি ।
জানি আমি মা যে আমার বহুরূপী,
সব নামেরই অন্তে তুমি ,
দুর্গা, কালী, লক্ষ্মী তারা ।

আমার আঁধার ঘরের সন্ধ্যা প্রদীপ
জ্বালাই যখন।
তোমার দুটি করুণ আঁখি পাখীর মতন
পালায় উড়ে।
শক্তি দে মা শক্তিময়ী রাখব ধরে ।
সব কালিমা ঘুচিয়ে দে মা
ভরিয়ে দে মা হৃদয় আমার
ভক্তি রসের বন্যা ধারায় ।

আমার আঁধার ঘরের সন্ধ্যা প্রদীপ তুমিই মাগো,
ঘুমায় যখন জগত তখন তুমিই জাগো।
নিদ্রা আমার ঘুচাও মাগ
ঢেলে তোমার নিদ্রাবিহীন আলোক ধারা।
তোমার আলোয় দেখব তোমায়
রূপ যে তোমার মনোহরা ।
তুমি চাও কি গো মা দেখতে আমায়
তোমার মতন পাগল পারা ।